রাসেল পার্ক, মুড়াপাড়া | ভ্রমণকাল

রাসেল পার্ক, মুড়াপাড়া

murapara-rasel-park
প্রকৃতিপ্রেমীরা একটু সময় পেলেই ঘুরে আসতে চান। প্রকৃতির সবুজ ছায়াঘেরা পরিবেশে নিজেকে কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে খুঁজে পান নির্মল আনন্দ। প্রকৃতিপ্রেমীদের কথা চিন্তা করেই ১৯৯০ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার মুড়াপাড়ায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে রাসেল পার্ক। ৩৫ বিঘা জমির ওপর এই পার্কটিতে রয়েছে বিনোদনের নানা আয়োজন।

যানজট না থাকলে রাজধানী থেকে সড়ক পথে রূপগঞ্জ যেতে সময় লাগবে মাত্র ৪০ মিনিট। রূপগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে চমৎকার পথ চলে গেছে রাসেল পার্ক পর্যন্ত। দু`পাশে সবুজের ঘন সমারোহ আপনাকে মুগ্ধ করবে। প্রথমে এটি ছিল একটি বাগানবাড়ি। পরবর্তীতে বাগান বাড়িটি বিনোদন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হয়। সারিবদ্ধ গজারি বন এখানকার প্রকৃতির রূপ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

গাছগাছালিতে ভরা এই পার্কটিতে রয়েছে মনোরম দ্বিতল বাংলো। আরও রয়েছে কৃত্রিম লেক, সুসজ্জিত নৌকা, পুকুর, স্লিপার ও দোলনাসহ সবুজ ঘাসে ঢাকা শিশুদের জন্য খেলার মাঠ। এছাড়াও কৃত্রিম হাতি, ঘোড়া, জিরাফ, হরিণ, বাঘ, পুকুরে হাঁস, আঁকাবাঁকা পথের ধারে ঘোড়ার ভাস্কর্য পার্কের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে। শুধু কৃত্রিম পশুপাখিই নয়, মিনি পার্কের মিনি চিড়িয়াখানায় রয়েছে খরগোশ, হরিণ, ভালুক, ঘোড়া, হনুমান, বানর, শিয়াল, সাপসহ হরেক রকম পাখি।

পার্কটি পাখির কলকাকলিতে সব সময় মুখরিত থাকে। এখানে দর্শনার্থীদের বসার জন্য রয়েছে তিনটি মাটির ঘর। পানীয় জল ও বিদ্যুতের সুব্যবস্থা তো রয়েছেই। পিকনিক স্পটের পাশেই পাবেন ফাস্টফুডের দোকান। নিজেরা রান্নাবান্না করে খেতে চান? কোনো অসুবিধা নেই। পার্কে রান্নাঘরও রয়েছে।

এখানে রাতে থাকতে চাইলে পার্কের রেষ্ট হাউজে থাকতে পারবেন। দর্শনার্থীদের বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে পার্কে রয়েছে কৃত্রিম লেকে নৌকার ব্যবস্থা। লেকে সুসজ্জিত নৌকায় আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন। পার্কে একটি গোলাপ বাগানও রয়েছে। পুরো পার্কটি সাজানো হয়েছে হাজারো দেশি-বিদেশি ফুল দিয়ে।

খোলা ও বন্ধের সময়সূচি

সপ্তাহের প্রতিদিনই খোলা থাকে রাসেল পার্ক। সকাল ৯.৩০ মিনিটে আপনি প্রবেশ করতে পারবেন আর বন্ধ হয়ে যায় সন্ধ্যা ৬টা পর।

রাসেল পার্ক প্রবেশ মূল্য

রাসেল পার্ক প্রবেশের জন্য আপনাকে গুনতে হবে জন প্রতি ৫০ টাকা। তবে ৩ বছরের নিচের বাচ্চাদের জন্য কোন প্রবেশ ফি দিতে হয় না।

রাসেল পার্ক কিভাবে যাবেন

রুট ১: ঢাকার গুলিস্থান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এর সামনে থেকে ঢাকা-সিলেট মড়াসড়কের রূপসী বাসস্ট্যান্ড নামতে হবে ভাড়া নিবে ৩৫ টাকা (গ্লোরী কাউন্টার বাস সার্ভিস), রুপসী বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোতে চড়ে জনপ্রতি ১৫টাকা ভাড়া দিয়ে নামে হবে মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির সামনে, সেখান থেকে ২০ টাকার রিক্স বা ১০টাকা অটো ভাড়া দিয়ে পৌছে যাবেন রাসেল পার্কের গেইটের সামনে। যানজট না থাকলে রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক পথে মাত্র ৪০ মিনিটের পথ। রূপগঞ্জ উপজেলা সদরের মাহমুদাবাদ এলে পৌঁছে যাবেন মনোমুগ্ধকর রাসেল পার্কে।

রুট ২: ঢাকার সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ি থেকে যেতে হবে ডেমরা স্টাফ কোয়াটার ভাড়া ১৫ টাকা করে। স্টাফ কোয়াটার থেকে সি এন জি তে করে যেতে হবে রুপগঞ্জ থানার সামনে ভাড়া ৪০ টাকা জনপ্রতি। তারপর নৌকাযোগে শীতলক্ষ্যা নদী পারি দিতে হবে পৌছে যাবেন মুড়াপাড়া বাজারে নৌকা ভাড়া ৩ টাকা, মুড়াপাড়া বাজার থেকে রিক্সাযোগে ২০ টাকা দিয়ে পার্কের সামনে চলে আসতে পারবেন।

কোথায় খাবেন

রাসেল পার্ক এর খুব কাছেই রয়েছে মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, পার্কে ঘুরে ফিরে চলে আসতে পারেন মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি ঘুরে ফিরে চলে আসুন মুড়াপাড়া বাজারে, বাজারে
বেশ কয়েকটি মধ্যম মানের হোটেল রয়েছে, সেগুলোর যে কোন একটাতে আপনি দুপুরের খাবার সেরে নিতে পারবে।

যোগাযোগের ঠিকানা

রাসেল পার্ক (মিনি চিড়িয়াখানা)
মাহমুদাবাদ, মুড়াপাড়া, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ
পার্ক মালিক: ০১৭১৫৭৫৮৯০৫, ০১৭১১৫৪৬০৬৪
পার্ক ম্যানেজার: ০১৭০৭৫৯১৮৮৪

ভ্রমণকালে পরামর্শ

রাসেল পার্ক জায়গাটা খুবই ছোট, যেকোন সময় আসলেই আপনি ঘুরে ফিরে দেখে যেতে পারবেন। শুক্রবার জুম্মার সময় নামাজের জন্য কিছু সময়ের জন্য টিকেট বিক্রয় বন্ধ থাকে।

আশেপাশে দর্শনীয় স্থান

যেহেতু মুড়াপাড়া এলাকায় আসবেন, খুব কাছেই রয়েছে ১০০ বছরের পুরোনো মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, আধুনিক শেখ রাসেল নগর পার্ক, প্রায় ৪৫০ বছরের পুরোনো মুড়াপাড়া শাহী মসজিদ, ঘুরে দেখে যেতে পারেন। আরো কিছু নারায়ণগঞ্জ এর দর্শনীয় স্থান - বাংলার তাজমহল, বাংলার পিরামিড, সাতগ্রাম জমিদার বাড়ি, ভাওয়ালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ি, জ্যােতি বসুর বাড়ি, জিন্দা পার্ক
দৃষ্টি আকর্ষণ: আমাদের পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে এবং এইসব পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আর ভ্রমনে গেলে কোথাও ময়লা ফেলবেন না। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
ভ্রমণকাল: আমাদের টিম সবসময় চেষ্টা করে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা বানান ভুল হয়ে থাকে বা ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে অথবা আপনার কোন ভ্রমণ গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তাহলে Comments করে জানান অথবা আমাদের কে ''আপনার মতামত'' পেজ থেকে মেইল করুন।