বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি | ভ্রমণকাল

বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি

birulia-jamidar-bari
ঐতিহাসিক নগরী সাভারের সমৃদ্ধ ইতিহাসের অন্যতম আরো একটি নিদর্শন সাভারের বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি। বিরুলিয়া’ তুরাগ নদীর পাড়ে প্রাচীন জনপদ ও ছোট্ট একটি গ্রামের নাম। ঢাকা শহরের অত্যন্ত কাছের এই বিরুলিয়া গ্রাম দশটিরও অধিক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার জন্য সুপরিচিত। বিরুলিয়া গ্রামের শেষ প্রান্তে আছে জমিদার রজনীকান্ত ঘোষের বাড়ি, যা বর্তমানে বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত।

এই গ্রামটির বেশিরভাগ অধিবাসীই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ইতিহাসের সাক্ষী কিংবা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে গেলেও বিরুলিয়ার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও জমিদার বাড়ি লোকচক্ষুর অন্তরালেই রয়ে গেছে। বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়বে ছড়ানো ছিটানো কালের সাক্ষী হয়ে এখনও দাঁড়িয়ে থাকা জড়া জীর্ণ বাড়ি গুলো। আছে শতবর্ষী একটি মন্দিরও। গ্রামের ঠিক শেষ মাথায় নদীর তীর ঘেঁষে বাড়িটি জমিদার রজনীকান্ত ঘোষের। সেখানে এখনো বাস করছেন রজনীকান্ত ঘোষের বংশধররা।

স্থানীয় অধিবাসী এবং জমিদারের উত্তরসূরিদের কাছ থেকে জানা যায়, সেই সময়ের জমিদার নলিনী মোহন সাহার কাছ থেকে রজনীকান্ত ঘোষ ৮৯৬০ টাকা ৪ আনা দিয়ে বাড়িটি কিনে নেন। পুরান ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় জমিদার রজনীকান্ত ঘোষের কয়েকটি বাড়ি থাকলেও এখন প্রায় সবগুলোই অন্যদের দখলে।

১৯৬৪ সালে দাঙ্গার সময় মূল্যবান সব জিনিস লুটপাট হওয়ার পর বিরুলিয়া গ্রামের জমিদার বাড়িটি ছাড়া রজনীকান্তের আর কোনো সম্পত্তি অবশিষ্ট নেই। বাড়িগুলোতে আছে সদরঘর, বিশ্রামঘর, বিচারঘর, পেয়াদাঘর, ঘোড়াশালাসহ উল্ল্যেখযোগ্য আরও কিছু ঘর। বিরুলিয়ার অন্যসব পুরোনো বাড়িগুলো পরবর্তী সময়ে একজন ব্যবসায়ী কিনে নিলেও এখন সেগুলোও বেদখল হয়ে গেছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরুলিয়ার মিরচিনি মুরালির খুব কদর। তাই তো সারা দেশের বিভিন্ন মেলায় সোনারগাঁয়ের পাশাপাশি বিরুলিয়ার এসব পণ্য বিক্রি হতে দেখা যায়।। এছাড়াও বিরুলিয়া থেকে কিছুটা দূরেই সাদুল্লাপুর গ্রামে রয়েছে গোলাপের বাগান। আর তাই সাদুল্লাপুর গোলাপ গ্রাম নামেই সবার কাছে পরিচিত। গোলাপ গ্রামের সুন্দর প্রকৃতি যে কারো মনকে দোলা দিবে। এক দিনেই বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি ও গোলাপ গ্রাম ঘুরে আসা যাবে।

বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি কিভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকার যেকোন স্থান হতে প্রথমে মিরপুর ১ নাম্বার সেক্টর চলে আসুন। সেখান থেকে আলিফ কিংবা মোহনা পরিবহণের বাসে চড়ে সরাসরি বিরুলিয়া ব্রিজ যেতে পারবেন। মিরপুর ১ থেকে বিরুলিয়া ব্রিজগামী লেগুনা পাওয়া যায়। লেগুনা ভাড়া নিবে জনপ্রতি ২০ টাকা। বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে যে কাউকে বললে বিরুলিয়া গ্রাম ও বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি দেখিয়ে দিবে।

এছাড়া আব্দুল্লাহপুর, বাইপাইল কিংবা আশুলিয়া থেকে মিরপুর বেরিবাধ এসে মিরপুর ১ গামী গাড়িতে করে বিরুলিয়া ব্রিজ যাওয়া যায়। বিরুলিয়া ব্রিজ পৌঁছে স্থানীয় যে কাউকে জিজ্ঞাস করলে আপনাকে বিরুলিয়া জমিদার বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দিবে।

আরো দেখুন

আহসান মঞ্জিল
রোজ গার্ডেন প্যালেস
দৃষ্টি আকর্ষণ: আমাদের পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে এবং এইসব পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আর ভ্রমনে গেলে কোথাও ময়লা ফেলবেন না। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
ভ্রমণকাল: আমাদের টিম সবসময় চেষ্টা করে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা বানান ভুল হয়ে থাকে বা ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে অথবা আপনার কোন ভ্রমণ গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তাহলে Comments করে জানান অথবা আমাদের কে ''আপনার মতামত'' পেজ থেকে মেইল করুন।