বাংলার পিরামিড | ভ্রমণকাল

বাংলার পিরামিড

banglar-pyramid
পিরামিডের নাম শুনলেই সবার চোখে নিশ্চয়ই ভেসে ওঠে মিসরের মরুভূমিতে থাকা ত্রিকোণা এক অবকাঠামো। জানেন কি, এমন দৃশ্য শুধু মিসরেই নয় দেখতে পাবেন নিজ দেশেই। তাও আবার ঢাকা শহরের খুব কাছেই।

পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি নিদর্শন হলো পিরামিড। এর দেখাও যে দেশে পাবেন তা হয়তো অনেকেরই অজানা। শুধু পিরামিড নয়, এর মধ্যে মমিও আছে। এর অবস্থান ঢাকার খুব কাছেই। মিসরের পিরামিডের আদলে তৈরি করা হয়েছে বাংলার পিরামিড বা রাজমনি পিরামিড। যা দেখতে যেতে পারেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পেরাব গ্রামে।

২০১৬ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন করা হয় বাংলার পিরামিড। দূর থেকে দেখলে মনে হবে ঠিক যেন মিসরের পিরামিড। একসঙ্গে ৮টি পিরামিড ধারাবাহিকভাবে সাজানো আছে এখানে। এসব পিরামিডের ভেতরে সংরক্ষিত রাখা মমিগুলোর তথ্য ও কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয়েছে মিসর ও চীনের বিভিন্ন জাদুঘর থেকে। সেখানে আছে প্রাচীনকালের রাজা-রানির পরিধেয় পোশাক।

এমনকি তাদের ব্যবহৃত মণিমুক্তা, তৈজসপত্র, অলঙ্কারাদি ও যুদ্ধে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণসহ নানা নমুনা। এর পাশেই আছে আফ্রিকান ভয়ঙ্কর জীবন্ত প্রাণী আইরল। দেশের পিরামিড দেখতে আপনাদের যেতে হবে বাংলার তাজমহলে। বাংলার তাজমহলসহ পিরামিড নির্মাণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধা ও চলচিত্র নির্মাতা আহসানউল্লাহ মণি।

মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ মণি রাজমনি ফিল্ম সিটি নামে একটি বিশাল প্রকল্পের আওতাও এসব তৈরি করছেন। বর্তমানে এই প্রকল্পে আছে তাজমহলের রেপ্লিকা, পিরামিডের রেপ্লিকা, ফিল্ম জাদুঘর ও ডিজিটাল সিনেমা হল।

এই বাংলার পিরামিড দেখতে চাইলে আপনাকে টিকিটের জন্য খরচ করতে হবে ১৫০ টাকা। শুধু বাইরে থেকেই নয় চাইলে এই পিরামিডের ভেতরেও ঢুকতে পারবেন। প্রতিটি পিরামিডের মধ্যেই দেখতে পাবেন একটি করে মোট ৮টি মমির রেপ্লিকা। ২০১৬ সালে স্থাপিত এই পিরামিড দেখতে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী ভিড় জমায়।

আপনিও সময় করে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার খুব কাছেই বাংলার পিরামিডে। ঠিক মিসরের পিরামিডের মতোই এর ভেতরে সংরক্ষিত আছে মমিও।

বাংলার পিরামিড সাপ্তাহিক বন্ধ
বাংলার তাজমহল/বাংলার পিরামিড সপ্তাহের প্রতিদিনই খোলা থাকে।

সময়সূচী ও টিকেট মূল্য

বাংলার তাজমহল প্রতিদিনই সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তাজমহল ও পিরামিডের প্রবেশ মূল্য একসাথে পরিশোধ করেত হয়। শুধুমাত্র তাজমহল বা পিরামিড দেখার সুযোগ নাই। জনপ্রতি প্রবেশ টিকেটের মূল্য ১৫০ টাকা।এই টিকেট দিয়ে বাংলার মিরামিড দেখতে পারবেন।

বাংলার পিরামিড বা রাজমনি পিরামিড কিভাবে যাবেন

রুট ১: ঢাকা থেকে বাংলার তাজমহলের/বাংলার পিরামিড এর দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলোমিটার। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে যাওয়া কুমিল্লা দাউদকান্দি অথবা সোনারগাঁগামী বাসে চড়ে মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে নামতে হবে, সেখান থেকে সিএনজি অথবা অটোরিক্সায় জনপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ টাকা ভাড়ায় তাজমহল যাওয়া যায়। ঢাকার গুলিস্তান থেকে দোয়েল অথবা স্বাদেশ পরিবহনে যেতে পারেন মদনপুর বাসস্ট্যান্ড, ভাড়া পরবে ৬০ টাকা।

রুট ২: ঢাকা থেকে ৩০০ ফিট রাস্তা দিয়ে ভূলতা বাসস্ট্যান্ড এসে, সেখান থেকে ৮০ থেকে ১০০ টাকা ভাড়ায় অটোরিক্সা নিয়ে বাংলার পিরামিড যাওয়া যায়।

রুট ৩: ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ভৈরব, নরসিংদী কিংবা কিশোরগঞ্জগামী বাসে বরপা বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে, বরপা বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএসজিতে অথবা অটোতে করে তাজমহল/পিরামিড দেখতে যেতে পারবেন।

ভ্রমণকালে পরামর্শ

⦿ ১৫০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে প্রবেশ করা পর বাকি অংশ ফেরত দিবে, টিকেটের বাকি অংশ ফেলে দিবেন না, সেটা দিয়ে দেখিয়ে পিরামিডে প্রবেশ করতে পারবেন।
⦿ ছুটির দিন গুলোতে তাজমহলে লোক সমাগম বেশি হয়। ভীর এড়াতে ছুটির দিনগুলো বাদে অন্য দিন গুলােতে যেতে পারেন।
⦿ পিরামিডের ভেতর ভূতের সাউন্ড দেয়া হয়, বাচ্চাদের ভিতরে প্রবেশ না করানোই ভালো হবে।

বাংলার পিরামিড এর আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

পানাম নগর
সোনারগাঁও লোক শিল্প জাদুঘর
▢ বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ি
মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি
জ্যৌতি বসুর বাড়ি
সাতগ্রাম জমিদার বাড়ি
দৃষ্টি আকর্ষণ: আমাদের পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে এবং এইসব পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আর ভ্রমনে গেলে কোথাও ময়লা ফেলবেন না। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
ভ্রমণকাল: আমাদের টিম সবসময় চেষ্টা করে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা বানান ভুল হয়ে থাকে বা ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে অথবা আপনার কোন ভ্রমণ গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তাহলে Comments করে জানান অথবা আমাদের কে ''আপনার মতামত'' পেজ থেকে মেইল করুন।