প্রায় ১০০ বিঘা জায়গা জুড়ে গড়ে ওঠা জিন্দা পার্কে রয়েছে একটি কমিউনিটি স্কুল, কমিউনিটি ক্লিনিক, নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী বিশিষ্ট একটি লাইব্রেরি, মসজিদ, ঈদগাহ, কবরস্থান, রয়েছে একটি রেস্তোরা। ২৫০ প্রজাতির ১০ হাজারের বেশী গাছ-গাছালী আছে পার্কটিতে। গাছের এই সমারোহ এর পরিবেশকে করেছে শান্তিময় সবুজ, কলকাকলীতে মুখর করেছে অসংখ্য পাখীরা। শীতল আবেশ এনেছে ৫ টি সুবিশাল লেক। তাই গরম যতই হোক পার্কের পরিবেশ আপনাকে দেবে শান্তির ছোঁয়া।
ফ্যামিলি পিকনিকের জন্য জিন্দা পার্ক এখন বেশ পরিচিত জায়গা। কাঠের ব্রিজ পার হয়ে দিঘির মাঝামাঝি তৈরি করা বাঁশের টি রুমে বসে প্রিয়জনের সঙ্গে এক কাপ চা কিংবা জলে পা ডুবিয়ে বসে থাকার সময়গুলো দারুণ উপভোগ করবেন। সঙ্গে গাড়ি না থাকলেও সমস্যা নেই। বাড়ি ফেরার জন্য পার্কের সামনেই পাবেন গাড়ি, সিএনজি। আর হ্যাঁ, পিকনিক করতে চাইলে দু-তিন দিন আগেই যোগাযোগ করুন। পিকনিকের খাবারের ব্যবস্থা পার্ক কর্তৃপক্ষই করে।
ইতিহাস
জিন্দা মূলত একটি গ্রামের নাম। গ্রামের “অগ্রপথিক পল্লী সমিতি”-র তত্ত্বাবধানে ১৯৮০ সালে জিন্দা পার্ক এর যাত্রা শুরু হয়। “অগ্রপথিক পল্লী সমিতি” সংগঠনের উদ্যোগে ১৯৮১ সালে পার্কটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পার্কটির আয়তন ১০০ বিঘা, যার মধ্যে ৬০ বিঘা জায়গা প্রদান করেন তবারক হোসাইন কুসুম। শুরুতে এর নাম শান্তিকানন দেওয়া হয়, পরে নাম পরিবর্তন করে জিন্দা পার্ক নামকরণ করা হয়। শুরুতে পার্ক এর ভিতর একটি বিদ্যালয় এবং অফিস স্থাপনের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে পাঠাগার, স্বাস্থকেন্দ্র, মসজিদ ইত্যাদি গড়ে তোলেন।খোলা/বন্ধের সময়সূচী
জিন্দা পার্ক সপ্তাহের সাতদিনই দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। যদি কোন বিশেষ কারণে পার্ক বন্ধ থাকে তবে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সেই সম্পর্কে নোটিশ পাবেন। জিন্দা পার্ক খোলে সকাল ৯টা আর বন্ধ হয়ে যায় বিকাল ৬ টায়। জিন্দা পার্কে থাকার কোন ব্যবস্থা নেই।প্রবেশ মূল্য
প্রাপ্ত বয়স্ক নারীপুরুষের জন্য জিন্দা পার্কে প্রবেশের টিকিট মূল্য জনপ্রতি ১৫০ টাকা এবং বাচ্চাদের জন্যে প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। আর পার্কিং সুবিধা নিতে চাইলে আরো ৫০ টাকা প্রদান করতে হবে। লাইব্রেরী ফি ১০ টাকা।জিন্দাপার্ক কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে জিন্দা পার্কের দূরত্ব প্রায় ৩৭ কিলোমিটার। জিন্দা পার্ক যাবার সবচেয়ে সহজ ও সুন্দর রাস্তা হল কুড়িল বিশ্বরোডের পূর্বাচল হাইওয়ে অর্থাৎ ৩০০ ফিট রাস্তা দিয়ে জিন্দা পার্ক যাওয়া৷রুট ১: জিন্দা পার্কে যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে যেতে হবে কুড়িল বিশ্বরোড। এরপর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বিআরটিসি বাসে চড়ে চলে যাবেন কাঞ্চন ব্রিজ। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত বিআরটিসি বাসের ভাড়া ৩০ টাকা। এরপর কাঞ্চন ব্রিজ থেকে জিন্দা পার্ক বাইপাস পর্যন্ত আপনাকে যেতে হবে লেগুনা বা অটোতো চড়ে, ভাড়া পরবে জনপ্রতি ৩০-৪০ টাকা। ড্রাইভার কে বললেই বাইপাসে আপনাকে নামিয়ে দেবে। এরপর পার্কের সাইনবোর্ড দেখে হেটে হেটেই পার্কের ভেতরে যেতে পারবেন। আবার কাঞ্চন ব্রিজ থেকে ১০০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে সরাসরি পার্কের গেটেও যেতে পারবেন।
কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ১৫ মিনিট পরপর একটি করে বাস ছাড়ে।(এই রুটে শুধুমাত্র বিআরটিসি বাস চলে) রুট ১: কাঁচপুর ব্রীজ পাড়ি দিয়ে ভূলতা গাউছিয়া হয়ে এবং টঙ্গী মিরের বাজার বাইপাস রাস্তা ধরে জিন্দা পার্ক যেতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
জিন্দা পার্কের ভিতরে মহুয়া স্ন্যাকস আ্যান্ড মহুয়া ফুডস নামে একটি রেস্টুরেন্ট আছে। ২২০ ও ২৭০ টাকার প্যাকেজ রয়েছে তাতে। যাতে পাবেন মুরগি/গরু/খাসি, সবজি, ডাল ও ভাত। এছাড়া পার্ক কতৃপক্ষ পিকনিক এর জন্য অগ্রিম খাবারের অর্ডার নিয়ে থাকেন। তবে আপনাকে অবশ্যই পিকনিকের কমপক্ষে একদিন পূর্বে অর্ডার নিশ্চিত করতে হবে। বাহির থেকে চাইলে খাবার নিতে পারবেন। এজন্য আপনাকে ২৫ টাকা এক্সট্রা দিতে হবে। সবচেয়ে ভাল হয়ে ৩০০ ফিট এসে কম টাকার মধ্যে খেলে, তাছাড়া নকশিপল্লী (পূর্বাচল) থেকেও খাওয়া দাওয়া সারতে পারেন।যোগাযোগের ঠিকানা
জিন্দা পার্ক, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ
ওয়েব সাইট: http://zindapark.comফোন: +৮৮০ ১৭১৬২৬০৯০৮
+৮৮০ ১৭১৫০২৫০৮৩,+৮৮০ ১৮১৬০৭০৩৭৭