শুভলং ঝর্ণা রাঙ্গামাটি জেলার বরকল উপজেলার মধ্যে পড়েছে। এই ঝর্ণার নির্মল জলধারা পর্যটকদের হৃদয়ে এক ভিন্ন অনুভূতির কাঁপন তোলে। ভরা বর্ষা মৌসুমে শুভলং ঝর্ণার জলধারা প্রায় ১৪০ ফুট উঁচু থেকে নিচে আছড়ে পড়ে এবং অপূর্ব সুরের মূর্ছনায় পর্যটকদের মুগ্ধ করে। বর্তমানে এ এলাকায় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। রাঙ্গামাটি সদর হতে শুভলং এর দুরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। জলপথে পাহাড়ের বুক চিরে আঁকা-বাঁকা চলার পথে যাওয়ার সময় রাঙ্গামাটির অপার সৌন্দর্য চোখে পড়বে।
এখানকার লেক, ঝরনা, বিস্তির্ন নীল আকাশ, পাহাড় সর্বপরি আদিবাসি মানুষের সাধারন সহজ-সরল জীবন আপনাকে বিমহিত করবে। এখানে যেদিকে তাকাবেন নজরে পড়বে কেবল পাহাড় আর কাপ্তাই লেকের পানি। বিশাল কাপ্তাই লেকের পুরোটাই যেন অপার মমতায় দুহাত দিয়ে ধরে রেখেছে পাহাড়গুলি। আকাশের মেঘ আর তার নীলাভ আভা খেলা করে লেকের জলে, দূরে পাহাড়ের আড়ালে হারিয়ে যায়, আবার যেন উকি দিয়ে দেখে নেয়, কেমন আছে লেক। হলফ করে বলা যায়, এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টান আপনাকে টানবেই।
শুভলং ঝর্ণা কিভাবে যাবেন
ঢাকার ফকিরাপুল মোড় ও সায়দাবাদ রাঙ্গামাটিগামী অসংখ্যা বাস কাউন্টার রয়েছে।এই বাস গুলো সাধারণত সকার ৮টা হতে ৯টা এবং রাত ৮.৩০ হতে ১১টার মধ্যে ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্য ছেড়ে যায়।ঢাকার রাঙ্গামাটি শ্যামলীর এসি বাসের ভাড়া ৯০০ টাকা, বিআরটিসি এসি বাসের ভাড়া ৭০০ টাকা। এছাড়াও সকল নন-এসি বাসের ভাড়া ৬২০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে।
রাঙ্গামাটি শহর থেকে শুভলং ঝর্ণায় যেতে হলে নৌ পথে যেতে হয়। ইঞ্জিন চালিত ট্রলার রিজার্ভ করাই সবচেয়ে ভালো উপায়। রাঙামাটি রিজার্ভ বাজার এলাকা থেকে অথবা পর্যটন এলাকা (রাঙ্গামাটি শহীদ মিনার) থেকে ট্রলার রিজার্ভ করা যায়। এগুলোর ভাড়া আকার অনুযায়ী বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে ভাড়া সাধারণত ১২০০-৩০০০ টাকার মধ্যে। মূল শহর থেকে শুভলং যেতে সময় লাগবে দেড় ঘণ্টার মত। শুভলং যেতে হয় কাপ্তাই লেকের উপর দিয়ে। কাপ্তাই লেক দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম লেক।
আশেপাশে দর্শনীয় স্থান
এছাড়াও রাঙ্গামাটি জেলায় আরো যে সমস্ত আকর্ষনীয় ও দর্শনীয় স্থান রয়েছে:
▢ ইকো পার্ক
▢ উপজাতীয় জাদুঘর
▢ ঝুম রেস্তোরা
▢ টুকটুক ইকো ভিলেজ
▢ যমচুক
▢ নির্বাণপুর বন ভাবনা কেন্দ্র
▢ রাজবন বিহার
▢ ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজবাড়ি
▢ পেদা টিং টিং
▢ উপজাতীয় টেক্সটাইল মার্কেট
▢ ফুরমোন পাহাড়
▢ সাজেক ভ্যালি
ভ্রমনকালে পরামর্শ
⦿ শুভলং ঝর্ণার পূর্ণ রূপ দেখতে হলে বর্ষাকালে বা তার পরের সময়ে যান।
⦿ শীতকালে সাধারনত ঝর্ণায় খুব অল্প পানি থাকে।
⦿ এক সাথে বা গ্রুপে গেলে খরচ কম পরবে।
⦿ অফসিজন বা ছুটির দিন ব্যাতিত গেলে খরচ কম পরবে।
⦿ ট্রলার/বোট রির্জাভ করার সময় কি দেখবেন কোথায় যাবেন ভালো মত বলে নিবেন।
⦿ রির্জাভ করার সময় ঠিকমত দরদাম করে নিন।
⦿ ট্রলার/বোট সারাদিনের জন্যে ভাড়া করুন তাহলে কাছা কাছি অনেক গুলো স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন।
⦿ ঝুলন্ত ব্রিজ, পলওয়েল পার্ক, শুভলং ছোট ও বড় ঝর্ণা এই স্পট গুলা খুবই কাছাকাছি।
⦿ লেকের কাছাকাছি কোন হোটেল ঠিক করুন।
⦿ কাপ্তাই লেকে নামার আগে/ সাতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট রাখুন।
⦿ একদিনেই কমন স্পট গুলো ঘুরে বেড়ানো যায়।
⦿ পরিবেশে ও জীববৈচিত্রের ক্ষতি হয় দয়া করে এমন কিছু করবেন না।
⦿ স্থানীয় মানুষদের সাথে শালীন আচরণ করুন।