রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৪
বরকতময় সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান, রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ফাউন্ডেশন । চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে আগামী ১২ বা ১৩ মার্চ। তবে রমজান শুরুর সময় ১২ মার্চ ধরে ঢাকার সেহেরি ও ইফতারের সময়সূচি নির্ধারণ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১৪৪৫ হিজরির রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারের এ সময়সূচি চূড়ান্ত করে। সময়সূচি অনুযায়ী, ১২ মার্চ প্রথম রমজানে ঢাকায় সেহরির শেষ সময় ভোররাত ৪টা ৫১ মিনিট ও ইফতারির সময় ৬টা ১০ মিনিট।

তবে দূরত্ব অনুযায়ী ঢাকার সময়ের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৯ মিনিট পর্যন্ত যোগ করে ও ৯ মিনিট পর্যন্ত বিয়োগ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ সেহেরি ও ইফতার করবেন বলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জানা গেছে।

আরবি/হিজরি বছর একটি চন্দ্র বর্ষ যা ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহামানব মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) তাঁর জন্মস্থান মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত (সফর) করার সময় থেকে মুসলমানগন গণনা করে আসছে। আর হিজরি বছরের ৯ম মাস মাহে রমজান যা মুসলমানদের জন্যে রহমত, বরকত ও নাজাত লাভের এক মহাপবিত্র মাস। রমজান মাসের পুরো মাস ব্যাপি মুসলমানগন সিয়াম পালন করে থাকেন ও সবসময় আল্লাহর ইবাদতে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। এই মাসে আল্লাহর ইবাদত করলে অন্য যে কোন মাসের তুলনায় বেশি নেকী পাওয়া যায়।

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি অনুসরন করে বরাবরের মত এবারও ''ভ্রমণকাল'' আপনাদের জন্যে একটি চমৎকার রোজার ক্যালেন্ডার তৈরী করেছে। ক্যালেন্ডারটি আপনি ইমেজ সেভ এজ করে ছবি আকারে ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে বা আপনার স্মার্ট ফোনে রেখে অনুসরন করতে পারেন এবং শেয়ার করতে পারেন আপনার পরিচিত জনদেরকেও।

রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৪

রোজার সময়সূচি - ২০২৪

বাংলাদেশ ইসলামী ফাউন্ডেশন কতৃক প্রকাশিত সময় অনুযায়ী তৈরি রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৪। দেশের সকল জেলার অধিবাসীগনই ঢাকা জেলার সময়ের সাথে তাদের জেলার উল্লেখিত সময় সামঞ্জস্য করে এই সূচী অনুসরণ করতে পারবেন।
সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৪

সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৪

রহমতের ১০ দিন
রোজাতারিখবারসেহরীইফতার
১২ মার্চমঙ্গল৪-৫১৬-১০
১৩ মার্চবুধ৪-৫০৬-১০
১৪ মার্চবৃহঃ৪-৪৯৬-১১
১৫ মার্চশুক্র৪-৪৮৬-১১
১৬ মার্চশনি৪-৪৭৬-১২
১৭ মার্চরবি৪-৪৬৬-১২
১৮ মার্চসোম৪-৪৫৬-১২
১৯ মার্চমঙ্গল৪-৪৪৬-১৩
২০ মার্চবুধ৪-৪৩৬-১৩
১০২১ মার্চবৃহঃ৪-৪২৬-১৩

নাজাতের ১০ দিন
রোজাতারিখবারসেহরীইফতার
১১২২ মার্চশুক্র৪-৪১৬-১৪
১২২৩ মার্চশনি৪-৪০৬-১৪
১৩২৪ মার্চরবি৪-৩৯৬-১৪
১৪২৫ মার্চসোম৪-৩৮৬-১৫
১৫২৬ মার্চমঙ্গল৪-৩৬৬-১৫
১৬২৭ মার্চবুধ৪-৩৫৬-১৬
১৭২৮ মার্চবৃহঃ৪-৩৪৬-১৬
১৮২৯ মার্চশুক্র৪-৩৩৬-১৭
১৯৩০ মার্চশনি৪-৩১৬-১৭
২০৩১ মার্চরবি৪-৩০৬-১৮

মাগফিরাতের ১০ দিন
রোজাতারিখবারসেহরীইফতার
২১১ এপ্রিলসোম৪-২৯৬-১৮
২২২ এপ্রিলমঙ্গল৪-২৮৬-১৯
২৩৩ এপ্রিলবুধ৪-২৭৬-১৯
২৪৪ এপ্রিলবৃহঃ৪-২৬৬-১৯
২৫৫ এপ্রিলশুক্র৪-২৪৬-২০
২৬৬ এপ্রিলশনি৪-২৪৬-২০
২৭৭ এপ্রিলরবি৪-২৩৬-২১
২৮৮ এপ্রিলসোম৪-২২৬-২১
২৯৯ এপ্রিল
মঙ্গল৪-২১৬-২১
৩০১০ এপ্রিলবুধ৪-২০৬-২২
আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রমজান মাস শুরু হবে এবং শেষ হবে। সতর্কতার জন্যে সূর্যাস্তের তিন মিনিট পর ইফতার ও মাগরিবের আযানের সময় নির্ধারন করা হয়েছে এবং একই ভাবে সতর্কতার জন্যে সুবহি সাদিকের তিন মিনিট আগে সেহরির শেষ সময় নির্ধারন করা হয়েছে আর ফজরের আযান দিতে হবে সুবহি সাদিকের তিন মিনিট পর অর্থাৎ সেহরির শেষ সময়ে ছয় মিনিট পর ফজরের আযান দিতে হবে।

ঢাকা জেলার বাইরে বসবাসরত রোজাদারগন অবশ্যই সেখানকার সেহরী ও ইফতারের স্থানীয় সময় অনুযায়ী সেহরী ও ইফতার গ্রহন করবেন। এই সেহরি-ইফতার সূচীতে দেয়া আছে কোন জেলার লোকজন ঢাকা জেলার কত মিনিট আগে বা পরে সেহরি-ইফতার পানাহার করবেন।

রোজার নিয়ত
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
আরবি নিয়ত: নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
বাংলায় নিয়ত: হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

ইফতারের আগ মুহূর্তে বেশি বেশি ইসতেগফার পড়া
اَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْم – اَلَّذِىْ لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ اَلْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْم
আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।

ইফতারের দোয়া
اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِيْمِيْن
আরবি: আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
বাংলায়: হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক্বের মাধ্যমে ইফতার করছি।


ইফতারের পর আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করে দোয়া :
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন-
ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ
উচ্চারণ: ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’
অর্থ: ‘(ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো ‘ (আবু দাউদ, মিশকাত)

খতমে তারাবীহ’র নির্দেশনা

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশব্যাপী একই নিয়মে তারাবীহ আদায় করা হচ্ছে। তবে লক্ষ্য করা গেছে এখনো কিছু কিছু মসজিদে নিজেদের মত করে খতমে তারাবীহ’র নামাজ আদায় করা হয়। বিভিন্ন মসজিদে একই নিয়মে পবিত্র কুরআনের নির্দ্দিষ্ট অংশ পাঠ করা না হলে ভ্রমনকারী, রোজার মাসে যারা স্কুল, কলেজ, কর্মস্থল থেকে ছুটিতে এক জায়গা থেকে অন্যত্র গমন করেন তারা অনেক সময় ধারাবাহিক ভাবে কুরআনের খতম থেকে বঞ্চিত হন এবং কুরআন খতমের সওয়াব থেকেও বঞ্চিত হন। এই সমস্যা সমাধানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সারা দেশে একই নিয়মে খতমে তারাবীহ পড়ার নির্দেশনা প্রদান করেছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী মাহে রমজানের প্রথম ৬ দিন প্রতি তারাবীহ’তে পবিত্র কুরআনের দেড় পারা করে ৯ পারা পড়তে হবে এবং পরবর্তি ২১ দিন প্রতিদিন এক পারা করে ২১ পারা পড়তে হবে। এতে ২৭তম তারাবীহ’তে পবিত্র কুরআন খতম সম্পন্ন হবে। দেশের সকল মসজিদে একই নিয়মে কুরআন পাঠ করা হলে দেশে যে কোন স্থানে গমনকারীগনও কুরআন খতম ও তার সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবেন না।