kutub-shah-masjid
কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে কুতুব মসজিদ বা কুতুব শাহ মসজিদ অবস্থিত। মসজিদের কোন শিলালিপি বর্তমান না থাকায় এর নির্মানশৈলী দেখে ১৬শ শতকের সুলতানী আমলের নিদর্শন হিসাবে এটিকে ধরে নেয়া হয়। তাই কুতুব শাহ মসজিদের রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব। মসজিদের পাশেই একটি কবর রয়েছে আর এই কবরটি কুতুব শাহের কবর বলে প্রচলিত আছে। কুতুব শাহ মসজিদের চারকোনায় চারটি অষ্টভূজ আকৃতির বুরুজ রয়েছে আর প্রত্যেক বুরুজের উপর মিনার রয়েছে। এছাড়া মসজিদটিতে সর্বমোট ৫ টি গম্বুজ রয়েছে।

পশ্চিম দিক বাদে মসজিদের তিন পাশ থেকেই মসজিদে প্রবেশের পথ রয়েছে। এ মসজিদের কার্নিশ বক্রাকার, মসজিদের দেয়ালে রয়েছে বিভিন্ন করুকাজ। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে সুলতানী আমলের সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপনা হিসাবে এর সুখ্যাতি রয়েছে। ১৯০৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুতুব শাহ মসজিদটিকে সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে নথিভুক্ত করে। কুতুব মসজিদ দেখার সাথে সাথে আপনার অষ্টগ্রাম হাওর ভ্রমণ ও হয়ে যাবে।

কুতুব শাহ মসজিদ কিভাবে যাবেন

কিশোরগঞ্জ থেকে অষ্টগ্রাম যেতে শহরের গাইটাল বাস স্ট্যান্ড হতে ঢাকা বা ভৈরবগামী অনন্যা সুপার অথবা যাতায়াত বাসে করে জনপ্রতি ১০০ টাকা ভাড়ায় কুলিয়ারচর থানার দাড়িয়াকান্দি বাস স্ট্যান্ড নেমে সিএনজি বা অটোরিক্সায় কুলিয়ারচর লঞ্চ ঘাট যেতে হবে।

ঢাকা থেকে অষ্টগ্রাম আসতে গোলাপবাগ বা মহাখালী বাস টার্মিনাল হতে অনন্যা সুপার অথবা যাতায়াত বাস যোগে ভৈরব হয়ে কুলিয়ারচর থানার দাড়িয়াকা্ন্দি বাস স্ট্যান্ড নেমে কুলিয়ারচর লঞ্চঘাট যেতে পারবেন। বাস ভাড়া লাগবে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।


কুলিয়ারচর লঞ্চঘাট হতে জনপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা ভাড়ায় অষ্টগ্রাম পৌছাতে সময় লাগবে ২-৩ ঘন্টার মত। সম্প্রতি কুলিয়ারচর লঞ্চঘাট হতে স্পীড বোট চালু হয়েছে জনপ্রতি ২০০ টাকা ভাড়ায় ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট সময়ে অষ্টগ্রাম যাওয়া যায়।

শুকনো মৌসুমে চাইলে সড়ক পথে অষ্টগ্রাম যেতে পারেন তবে এর জন্য আপনাকে বাজিতপুর উপজেলায় আসতে হবে। ট্রেনে আসলে ভাগলপুর রেলস্টেশনে নেমে ইজিবাইকে বাজিতপুর আসতে পারেন। যদি বাসে করে আসেন তবে ঢাকা থেকে বাজিতপুরের একটি বিআরটিসি বাস সার্ভিস আছে।

এছাড়া কিশোরগঞ্জগামী যেকোন বাসে করে কটিয়াদি নেমে বাস স্টপ থেকেই বাজিতপুরের সিএনজি পাবেন। বাজিতপুর বাজার থেকে ইজিবাইক বা সিএনজি যোগে চলে আসুন দিঘির পাড়। ঘাটে নৌকায় ১০ মিনিটে নদী পার হয়ে দেখতে পারবেন ইজিবাইক কিংবা মোটরসাইকেল অষ্টগ্রামগামী যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছে। মোটরসাইকেলে অষ্টগ্রাম যেতে জনপ্রতি ১০০ টাকা লাগে।

অষ্টগ্রামের যেকোন প্রান্ত থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিটে রিক্সা বা ইজিবাইক দিয়ে সহজে দেখে যেতে পারবেন ঐতিহ্যবাহী কুতুব শাহ মসজিদ।

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য প্রথম ও প্রধান জায়গা হলো জেলা পরিষদ ডাক বাংলো। ভাড়া ৩০০-১৫০০ টাকা । কেয়ারটেকার রন্জন ভাইয়ের সাথে আগে যোগাযোগ করে বুকিং দিয়ে রাখবেন। রান্নার ব্যবস্থাও উনি করবেন। ওনার ফোন নম্বর : ০১৭১-০২৯১২২৫ / ০১৯১৪-৯৭৫৩৮৯। এছাড়া অষ্টগ্রাম বাজারে থাকার জন্য কিছু হোটেল আছে এসব হোটেলের মান তেমন ভালো নয় তাই থাকার জন্য পরিচিত মানুষের সাহায্য নিন।


কোথায় খাবেন

অষ্টগ্রামে গিয়ে খেতে পারেন হাওরের তাজা মাছ। নিজেরা রান্না করতে চাইলে সকাল সকাল স্থানীয় বাজার থেকে কিনে নিয়ে রান্না করতে পারেন। স্থানীয় হোটেলেও মাছের বিভিন্ন পদের তরকারি পাওয়া যায়। সদ্য হাওর থেকে ধরে আনা বাহারি মাছ খেতে ভুলবেন না। অষ্টগ্রামে বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা পনির পাওয়া যায় তবে এর জন্য আপনাকে এক দিন আগে স্থানীয় পনীর বিক্রেতাদের অর্ডার করে রাখতে হবে। সেই সাথে অষ্টগ্রামের বিখ্যাত ৭ ইঞ্চি লম্বা মুরালির স্বাদ খেয়ে দেখতে পারেন।

আরো দেখুন