পুরনো এই স্থাপনা গুলোর নির্মাণ কৌশল দেখলে বর্তমান যুগের নির্মাতারা ভিমরী খেয়ে যায়। তৎকালীন সময়ে কিভাবে এতো মজবুত করে এই স্থাপনা গুলো নির্মাণ করা হয়েছে তা চিন্তার খোরাক যোগায়। বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে এমন অনেক প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার সাত গম্ভুজ মসজিদ তাদের অন্যতম।
সাত গম্বুজ মসজিদ ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত মুঘল আমলে নির্মিত একটি মসজিদ। এই মসজিদটি চারটি মিনারসহ সাতটি গম্বুজের কারণে মসজিদের নাম হয়েছে 'সাতগম্বুজ মসজিদ'। এটি মুঘল সাম্রাজ্য অন্যতম নিদর্শন। ১৬৮০ সালে মুঘল সুবাদার শায়েস্তা খাঁর আমলে তার পুত্র উমিদ খাঁ মসজিদটি নির্মাণ করান। মসজিদটি লালবাগ দুর্গ মসজিদ এবং খাজা আম্বর মসজিদ এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
মসজিদটির ছাদে রয়েছে তিনটি বড় গম্বুজ এবং চার কোণের প্রতি কোনায় একটি করে অণু গম্বুজ থাকায় একে সাত গম্বুজ মসজিদ বলা হয়। এর আয়তাকার নামাজকোঠার বাইরের দিকের পরিমাণ দৈর্ঘ্যে ১৭.৬৮ এবং প্রস্থে ৮.২৩ মিটার। এর পূর্বদিকের গায়ে ভাঁজবিশিষ্ট তিনটি খিলান এটিকে বেশ আকর্ষণীয় করে তুলেছে। পশ্চিম দেয়ালে তিনটি মিহরাব রয়েছে। দূর থেকে শুভ্র মসজিদটি অত্যন্ত সুন্দর দেখায়। মসজিদের ভিতরে ৪টি কাতারে প্রায় ৯০ জনের নামাজ পড়ার মত স্থান রয়েছে।
মসজিদের পূর্বপাশে এরই অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে রয়েছে একটি সমাধি। সমাধীটি “অজানা সমাধী” নামে পরিচিত। কথিত আছে, এটি শায়েস্তা খাঁর মেয়ের সমাধি। সমাধিটি ‘বিবির মাজার’ বলেও খ্যাত।
এ কবর কোঠাটি ভেতর থেকে অষ্টকোনাকৃতি এবং বাইরের দিকে চতুষ্কোনাকৃতির। বেশ কিছুদিন আগে সমাধিক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল। বর্তমানে এটি সংস্কার করা হয়েছে। মসজিদের সামনে একটি বড় উদ্যানও রয়েছে। মসজিদের পশ্চিম পাশে বাংলাদেশের বিখ্যাত মাদরাসা জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া অবস্থিত। একসময় মসজিদের পাশ দিয়ে বয়ে যেত বুড়িগঙ্গা। মসজিদের ঘাটেই ভেড়ানো হতো লঞ্চ ও নৌকা। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় তা কল্পনা করাও কষ্টকর। বড় দালানকোঠায় ভরে উঠেছে মসজিদের চারপাশ।
বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর দেখাশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। মসজিদটিতে রয়েছে ২ জন পেইশ ঈমাম। এবং সার্বক্ষনিক দেখাশুনা করার জন্য রয়েছে একজন কেয়ারটেকার।
▢ বাংলাদেশজাতীয় চিড়িয়াখানা
▢ বাংলাদেশজাতীয় জাদুঘর
কিভাবে যাবেন
সাত গম্ভুজ মসজিদটিতে যেতে হলে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডে। রাজধানীর গুলিস্থান থেকে মোহাম্মদপুরগামী যে কোন বাসে মোহাম্মদপুর যাওয়া যায়। মুহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এ নেমে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই লাল রং এর মসজিদটি দেখিয়ে দিবে।আরো দেখুন
▢ আহসান মঞ্জিল▢ বাংলাদেশজাতীয় চিড়িয়াখানা
▢ বাংলাদেশজাতীয় জাদুঘর