ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দোয়েল চত্বরের উত্তর পাশে, স্বাধীনতা-পূর্ব বাংলার তিন বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতার কবরের উপর স্থাপত্যটিই হল তিন নেতার মাজার। তিন নেতার মাজার রাঝধানী ঢাকা তথা বাংলাদেশের  স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম নিদর্শন। নতুন প্রজন্মের কাছে এটি একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান ও বটে। ১৯৬৩ সালে স্থপতি মাসুদ আহমেদ এবং এস এ জহিরুদ্দিন প্রখ্যাত তিন নেতা- হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদী, খাজা নাজিমুদ্দিন ও শেরে বাংলা এ. কে ফজলুল হক এর স্মরণে এটি নির্মাণ করেন। তৎকালীন রাজনীতিতে এই তিন নেতার অবদান অবিস্মরণীয়।

আবুল কাশেম ফজলুল হক রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের কাছে ‘শেরেবাংলা’ এবং ‘হক সাহেব’ নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি কলকাতার মেয়র, অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। যুক্তফ্রন্ট গঠনে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। ১৯৬২ সালে ২৭ এপ্রিল এই মহান নেতা ঢাকায় মারা যান।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন বিখ্যাত রাজনীতিক ও আইনজীবী। তিনি রাজনৈতিক জীবনে কলকাতা কর্পোরেশনের ডেপুটি মেয়র, ফজলুল হক কোয়ালিশন মন্ত্রিসভার শ্রম ও বাণিজ্য মন্ত্রী, খাজা নাজিমউদ্দীন মন্ত্রিসভায় বেসামরিক সরবরাহ মন্ত্রী, অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, মোহাম্মদ আলীর মন্ত্রিসভার আইনমন্ত্রী এবং পাকিস্তানে পঞ্চম প্রধানমন্ত্রীর মত গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। গণতান্ত্রিক রীতি এবং জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার কারণে তাকে ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। বরেণ্য এ নেতা ১৯৬৩ সালে ৫ ডিসেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতের একটি হোটেল কক্ষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

বাঙালি রাজনীতিক খাজা নাজিমুদ্দিন ছিলেন ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্য। নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সদস্য হিসেবে নাজিমুদ্দিন ব্রিটিশ আমলে দুইবার বাংলার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর মৃত্যুর পর তিনি পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল হন। ১৯৫১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের মৃত্যুর পর তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। নানা কারণে তিনি বাঙালি হয়েও বাঙালি মহলে অজনপ্রিয় ছিলেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ১৯৬৪ সালের ২২ অক্টোবর তিনি মারা যান।

তিন নেতার মাজার কিভাবে যাবেন

ঢাকার গুলিস্থান থেকে যে কোন বাসে চরে শাহবাগ নেমে যাবেন। শাহবাগ থেকে রিক্সা অথবা পায়ে হেটে তিন নেতার মাজার যেতে পারবেন। (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই তিন নেতার মাজার।)
অথবা গুলিস্থান থেকে রিক্সায় চরেও যেতে পারবেন তিন নেতার মাজার।

আরো দেখুন

শাহবাগের মোরের কাছেই রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দোয়েল চত্বর