প্রিয় শহর দার্জিলিং এর পথে | ভ্রমণকাল

প্রিয় শহর দার্জিলিং এর পথে

darjeeling
ভ্রমনপিপাসু মানুষের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম পাহাড়ের রাজ্য দার্জিলিং। শৈল শহরের রানী নামে পরিচিত এ শহরটি একনজরে সকলের মন কাড়ে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, হিমালয়ের রেলওয়ে ও চা এর জন্য দার্জিলিং জগৎ বিখ্যাত। মনোরম জলবায়ু ও সৌন্দর্যের কারনে দার্জিলিং অবসরে ছুটি কাটানোর আনন্দ উপভোগের জন্য সকলের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

প্রকৃতির হালকা ঠাণ্ডা মেঘের স্পর্শ যেন নিমিষেই ভুলিয়ে দিবে বহুদুর থেকে ছুটে আসা আপনার ক্লান্তিকে। শুধু পর্যটনের জন্যই নয়, বরং ব্রিটিশ শৈলীযুক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য দার্জিলিং বিখ্যাত যা ছাত্র-ছাত্রীদের মূল আকর্ষণ।

অবস্থান

পাহাড়ের উপর অবস্থিত স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা সুন্দর এই শহরটি পশিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ৬৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। প্রিয় শহরটি নিম্ন হিমালয়ের মহাভারত শৈল শ্রেণীতে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭১০০ ফুট উচ্চতায় বিরাজমান।

প্রাচীন ইতিহাস ও দার্জিলিং

দার্জিলিংয়ের সাথে সিকিম, ভুটান ও ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাস ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে সিকিম রাজ্য দ্বারা দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি অঞ্চল ও নেপাল রাজ্য দ্বারা শিলিগুড়ি সংলগ্ন সমতল অঞ্চল শাসিত হতো।

ব্রিটিশ ও সিকিমের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিবাদের ফলে ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে তিস্তা নদীর পূর্ব তীরের অঞ্চল সমূহ ব্রিটিশদের হস্তগত হয়। পরবর্তীতে ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ১২৩৪ বর্গমাইল ক্ষেত্রফল এলাকা জুড়ে গঠিত হয় এই দার্জিলিং জেলা।

সংস্কৃতি ও খাবার-দাবার

আদি-অন্ত থেকেই দার্জিলিংয়ের প্রতিটি মানুষ খুব মিশুক প্রকৃতির। এখানকার স্থানীয় মানুষদের পছন্দের খাবারের তালিকায় প্রথমে অন্তর্ভুক্ত গরু মাংস এবং মসুর ডাল দিয়ে ভাত। তাছাড়া তাদের কাছে জনপ্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে আছে- গানড্রাক (গাঁজানো সরিষা পাতা), মম (সবজি বা মাংস দিয়ে পিঠার ন্যায় একধরনের খাবার), চ্যাং (স্থানীয় বিয়ার) এবং থুপকা (নুডলস ও মাংস দিয়ে তৈরি একধরণের ঘন স্যুপ) অন্যতম।

ভিসা

দার্জিলিং যেতে প্রথমে আপনাকে চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে "বাই রোড ক্যাটাগরিতে" ভারতীয় দূতাবাস থেকে ভিসা নিতে হবে।

থাকার হোটেল বুকিং

দার্জিলিং শহরে পর্যটকদের জন্য স্বল্প মূল্যে বিভিন্ন আকারের ছোট-বড় থাকার হোটেল আছে। এখানে রুমভেদে প্রায় ১০০০ থেকে ১৮০০ রুপির মধ্যে আধুনিক সব সুবিধাসহ ওয়াইফাই ও গরম পানির ব্যবস্থা-সমৃদ্ধ মানসম্মত থাকার হোটেল পাওয়া যায়। থাকার হোটেলের মধ্যে বেলভিউ, সাগরিকা, সোনার বাংলা, মহাকাল হোটেলগুলোই ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

এক রুমে কতজন থাকবেন তার কোন সীমাবদ্ধতা নেই। মনে রাখা প্রযোজ্য যে, দার্জিলিংয়ে রাত আটটার মধ্যে সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। সুতরাং হোটেল বুকিং ও রাতের খাবার রাত আটটার মধ্যেই শেষ করতে হবে।

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

রেলওয়ে ষ্টেশন ঘুম

দার্জিলিংয়ের ঘুম ষ্টেশন হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু রেলওয়ে ষ্টেশন যা দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি পথ বেয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত। যার দৈর্ঘ্য ৮৬ কিলোমিটার এবং পথের উচ্চতা শিলিগুড়িতে ৩২৮ ফুট ও দার্জিলিংয়ে ৭৪০৫ ফুট।

টাইগার হিল

দার্জিলিং ভ্রমনে দর্শনার্থীদের প্রধান আকর্ষণ বিন্দু হলো এই টাইগার হিল যেখানে আপনি সমুদ্র-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় দশ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত হিমালয়ের বরফ ছুঁয়ে দেখতে পাবেন সূর্যোদয়ের চিকিমিকি হাসি। যা দার্জিলিং শহর থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

কাঞ্চন জংঙ্ঘা

দার্জিলিং শহর পেরিয়ে খুব কাছেই আরেকটি শহর যার নাম কাঞ্চন জংঙ্ঘা। যেখান থেকে দেখা যায় প্রায় আট হাজার তিনশত ফুট উঁচু বরফে ঢেকে যাওয়া হিমালয় পর্বতমালা। আপনি চাইলে সেখানে প্যারাগ্লাইডিং করতে পারেন।

মিরিক লেক

দার্জিলিংয়ের পাশেই খুব ছোট একটি শহর মিরিক। পুরো শহরটি বরফে আচ্ছাদিত পাহাড় ও লেকের সমন্বয়ে ঘেরা।

টয় ট্রেন

জনপ্রতি ৬৩০ রুপি, আপনি এই বিখ্যাত টয় ট্রেনে নতুন রূপে পুরো দার্জিলিং ঘুরে দেখতে পারেন।

পশুপতি মার্কেট

দার্জিলিং থেকে চাইলে খুব সহজে জিপে করে ঘুরে আসতে পারেন নেপালের পশুপতি মার্কেট।

ঘুম মোনাস্ট্রি

এখানে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও বিখ্যাত প্রার্থনার স্থান ঘুম মোনাস্ট্রি।

বাতাসিয়া লুপ

ছবির মতোই সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন এই স্মৃতিসৌধটি বাতাসিয়া লুপ, যার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এটি একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এবং চূড়া থেকে নিচের দিকে ক্রমশ ঢালু।

দার্জিলিং চিড়িয়াখানা

প্রায় বিলুপ্ত পাহাড়ি বাঘ এবং তুষার চিতাবাঘের জন্য বিখ্যাত একটি দার্জিলিং চিড়িয়াখানা রয়েছে যা দর্শনার্থীদের কাছে পদ্মাজায়া নাইদু হিমালায়ান জুলোজিকাল পার্ক নামে পরিচিত।

হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট

সেখানে আছে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, পাহাড়ের উপর অবস্থিত একটি অভিযান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

এভারেস্ট বিজয়ী তেনজিং রক এর স্মৃতিস্তম্ভ

আছে সর্বপ্রথম এভারেস্ট বিজয়ী তেনজিং-রক- এর স্মৃতিস্তম্ভ যা ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত এটি একটি প্রাকৃতিক পাথর খণ্ড।

ক্যাবল কারের ভ্রমণ

দর্শনার্থীদের বিনোদন প্রয়াস আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সেখানে আছে ক্যাবল কারে ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে ভ্রমণ সুবিধা।

হ্যাপি ভ্যালী টি গার্ডেন

দার্জিলিংয়ের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং পুরনো চা বাগান এই হ্যাপি ভ্যালী টি গার্ডেন। চায়ের জন্য বিখ্যাত এই বাগানে দর্শনার্থীদের আনাগোনা দিনদিন বেড়েই চলছে।

তিব্বতিয়ান সেলফ হেলপ সেন্টার

দার্জিলিংয়ে একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত তিব্বতি সেলফ হেলপ সেন্টার রয়েছে।

দার্জিলিং গোরখাল্যান্ড স্টেডিয়াম

এই গোর্খাল্যান্ড স্টেডিয়ামটি প্রায় ৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।

দার্জিলিং মিউজিয়াম

দার্জিলিং-এ একটি বিশাল জাদুঘর রয়েছে যেখানে প্রাচীনকালে নেপালি জাতির স্বাক্ষর বহন করা হত।

জাপানিজ টেম্পল

বিশ্ব বিখ্যাত বৌদ্ধ বিহার জাপানি মন্দিরটিও দার্জিলিং-এ অবস্থিত যা প্রতিনিয়ত হাজার হাজার পর্যটক এখানে ঘুরতে আসে।

আভা আর্ট গ্যালারি

দার্জিলিং-এ ব্রিটিশ-যুগের সরকারি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র কাউন্সিল হাউস রয়েছে যা আভা আর্ট গ্যালারি নামে পরিচিত, যা লাল কুঠির চমৎকার শিল্পকর্মের জন্য বিখ্যাত।

দিরদাহাম টেম্পল

আরেকটি পর্যটকের অন্যতম আকর্ষণ হল দার্জিলিং-এ অবস্থিত শতাব্দী প্রাচীন মন্দির দিরদাহম মন্দির।

রক গার্ডেন ও গঙ্গামায়া পার্ক

দাজিলিং এর এখানে তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য পাথর কেটে ও কারুকার্য মণ্ডিত রক গার্ডেন ও গঙ্গামায়া পার্ক।

ভিক্টোরিয়া ফলস ও সুসভ্য জাতির সংস্কৃতি

দার্জিলিংয়ে অদূরেই রয়েছে পানির অবিরাম ঝর্ণাধারা ভিক্টোরিয়া ফলস ও সুসভ্য জাতির সংস্কৃতি।

সেন্ট পল’স স্কুল

সেন্ট পলস, একটি দুইশত বছরের পুরনো স্কুল যা তার ইতিহাসের জন্য বিখ্যাত, এখনও পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে সবসময়। আর স্কুল চত্বর থেকেই দেখা যায় কাঞ্চন জংঘার হিমালয়ের সাদা রূপ।

ইমিগ্রেশন নিয়ে দার্জিলিং যাওয়ার সময় প্রতিদিন যথারীতি সময়ে সকাল ৯টায় বর্ডার খুলে। বাংলাদেশ প্রান্তে ১০০ টাকা ও ভারত প্রান্তে ১০০ টাকার বিনিময়ে কিছু দালাল ইমিগ্রেশন সহায়তা করে থাকে।

দালালদের কাছে পাসপোর্ট দেওয়ার পর তাদের দিকে কড়া দৃষ্টি রাখুন নতুবা আপনি একাই ইমিগ্রেশন পাড়ি দিতে পারেন।

ফিরে আসার সময়

ইমিগ্রেশনের দুই প্রান্তে (বাংলাদেশ-ভারত) সীমান্তে আপনাকে জিজ্ঞেস করলে সাথে কি কি কিনেছেন? উত্তরে আপনি বলবেন পরিবারের জন্য কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস।

কত টাকার শপিং করেছেন এরকম কোন প্রশ্ন করলে তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও ফিরে আসার সময় কিছু দালাল ১৫০ রুপির বিনিময়ে সহায়তা করে থাকে।

মুদ্রা বিনিময়

বাংলা টাকা আপনি চ্যাংড়াবান্ধাতেই রুপিতে পরিবর্তন করে নিন। কেনোনা দার্জিলিংয়ে আপনি বাংলা টাকার রেট খুবই কম পাবেন।

দার্জিলিংয়ে কেনাকাটা

দার্জিলিংয়ের প্রতিটি রোডের অলিগোলিতে ও দেয়ালের গা ঘেঁষে গড়ে ওঠেছে অসংখ্য ছোট-বড় মার্কেট যেখানে দৈনন্দিন ব্যবহারের দ্রব্যাদি থেকে শুরু করে সবকিছু পেয়ে যাচ্ছে দর্শনার্থীরা হাতের নাগালে।

দার্জিলিং পাহাড়ের রাজ্য বলে এখানে শীতের প্রকোপ কিছুটা বেশি হওয়ায় দোকানগুলোতে সবসময় শীতের কাপড় বিক্রির ধূম চলে এবং কাপড়ের মানও খুব ভালো। এছাড়া এখানে আছে দর্শনার্থীদের পছন্দসই রঙ-বেরঙের ও বিভিন্ন কাজের মানসম্মত নেপালি শাল ও শাড়ি।

যেহেতু দার্জিলিং চা পাতার জন্য বিখ্যাত তাই আপনি চাইলে সেখান থেকে সতেজ চায়ের প্যাকেট কিনতে পারেন। এছাড়া শিলিগুড়ি দিয়ে দার্জিলিং আসা-যাওয়ার সময় শিলিগুড়ির বিধান মার্কেট থেকেও কেনাকাটা করতে পারেন।

খাবার-দাবার

বলা যায় যে, ভোজন রসিকদের জন্য বেশ উপযোগী, জনপ্রিয় ও সাশ্রয়ী স্থান দার্জিলিং। ভারতীয় ও বাঙালিদের জন্য এখানে আছে প্রতিটি রেস্টুরেন্টে সুস্বাদু খাবারের তালিকা। চাইলে আপনি এখানকার স্ট্রিটফুড ও খেতে পারেন।

জনপ্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে চিকেন মোমো, পানি ফুচকা, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, চিকেন ও মাটন নুডুলস অন্যতম। এখানে নুডুলস দামে যেমন সস্তা তেমনি পরিমানেও বেশি দেয়।

এখানে ভালো মানের খাবারের জন্য চাইলে সিমলা রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন।

এছাড়া দার্জিলিংয়ের বড় মসজিদের পাশে মুসলিমদের জন্য আছে ইসলামিয়া হোটেল নামে মোট তিনটি রেস্টুরেন্ট। প্রতিটি রেস্টুরেন্টই মুসলমানদের জন্য রুচি সম্মত খাবার পাওয়া যায়।

দার্জিলিং যাওয়ার সঠিক সময়

দার্জিলিং যাওয়ার আদর্শ সময় হচ্ছে প্রকৃতির রাজ বসন্ত ও শরৎকাল। অর্থাৎ মার্চ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সেখানে বসন্তকাল বিরাজ করে এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সেখানে শরৎকাল বিরাজমান।

এছাড়াও শীতের শুরু বা শেষের দিক দার্জিলিং গেলে সুন্দর সময় উপভোগ করা যাবে। বর্ষাকালে দার্জিলিংয়ে পাহাড়ি ধস নামে যার কারনে শীতে সেই ঝুঁকিটা আর থাকে না।

সম্পূর্ণ খরচ

ঢাকা থেকে দার্জিলিং যাওয়া, থাকা, খাওয়া, যাতায়াত বাবদ সড়ক পথে সর্বোচ্চ খরচ পড়বে জনপ্রতি ১৫০০০ টাকা। তবে আকাশ পথে খরচ একটু বেশি বলে অধিকাংশ পর্যটকরা দার্জিলিংয়ে যাওয়ার জন্য সড়ক পথকেই বেছে নেয়।

বলে রাখা ভালো যে, বুড়িমারি দিয়ে দার্জিলিং গেলে খরচ কম পড়বে তবে কলকাতা হয়ে গেলে খরচটা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।

দার্জিলিং যাবার উপায়

আকাশ পথে অথবা সড়ক পথে, সাধারণত এই দুই পথ দিয়েই দর্শনার্থীরা দার্জিলিং যেতে পারে।

আকাশ পথে দার্জিলিং

বিমানে করে দার্জিলিং যেতে চাইলে আপনাকে প্রথম ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে জেট এয়ার, এয়ার ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ বিমান ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ বিমানে করে পাড়ি দিতে হবে কলকাতায়। যার খরচ পড়বে প্রতিজনের প্রায় ১১০০০ থেকে ১৫০০০ টাকা।

কলকাতায় পৌঁছুলে সেখান থেকে বাস, ট্রেন অথবা বিমানে করে যেতে হবে শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি থেকে জিপ গাড়ির মাধ্যমে মাত্র আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে আপনি পৌঁছে যাবেন দার্জিলিং শহরে।

সড়ক পথে যাওয়ার উপায়

সড়ক পথে দার্জিলিং যেতে হলে আপনাকে প্রথমে রাত ৮ টায় বুড়িমারির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ঢাকার গাবতলী থেকে নন এসি বাস হানিফ অথবা এস আর ও এসি বাস মানিক এক্সপ্রেস, শ্যামলী, এস আর পরিবহনে করে যেতে হবে বুড়িমারি বর্ডার পর্যন্ত। ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার জার্নি পথে নন এসি বাসে ভাড়া জনপ্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা ও এসি বাসে ভাড়া জনপ্রতি ৮৫০ টাকা। বাসে প্রত্যেকের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা আছে। যেখানে যাত্রীরা পাচ্ছে ১টি মিষ্টি, ১টি ডিম ও ২পিস পাউরুটি।

তবে বলে রাখা ভালো যে, শ্যামলীর ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ১৫০০ টাকা। কেনোনা তারা ঢাকা থেকে সরাসরি শিলিগুড়ি পর্যন্ত টিকেট করে থাকে।

বুড়িমারি বর্ডার এলাকায় বাস পৌঁছুলে আপনাকে দার্জিলিং পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে সেখানে ইমিগ্রেশন করে নিতে হবে। চাইলে বুড়িমারির ঐতিহ্যবাহী সেই বুড়ি হোটেলে আপনি নাস্তা সেরে নিতে পারেন।

ইমিগ্রিশন শেষ করে বর্ডার পাড় হয়ে আপনি চ্যাংড়াবান্ধায় পৌঁছে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। সদস্য সংখ্যা বেশি হলে মাত্র ২০০০ রুপিতে একটি জিপ ভাড়া নিয়ে যেতে পারেন শিলিগুড়ি অথবা জনপ্রতি শেয়ার জিপ ভাড়া ২০০ রুপি করে যেতে পারেন সেখানে। পৌছুতে সময় লাগবে মাত্র ২ ঘণ্টা। ট্যাক্সি রিজার্ভ করে গেলে ভাড়া পড়বে ১২০০ রুপি। অথবা বাসে করে যেতে যাইলে চ্যাংড়াবান্ধা বাইপাস থেকে মাত্র ৮০ রুপি জনপ্রতি ভাড়ায় যেতে পারেন শিলিগুড়িতে।

শিলিগুড়ির দার্জিলিং স্ট্যান্ড থেকে শেয়ার জিপে জনপ্রতি ভাড়া নিবে ২০০ রুপি। একটি জিপে সাধারণত দশ জনের মতো মানুষ বসতে পারে। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যেতে সময় লাগবে প্রায় আড়াই ঘণ্টা।

ভ্রমণকালে সতর্কতা ও পরামর্শ

ভ্রমনের সময় সাথে করে অবশ্যই পাসপোর্ট ও ভিসার পাঁচ কপি ফটোকপি নিয়ে রাখবেন। বিভিন্ন সময়ে এগুলো কাজে লাগে।
দার্জিলিং শীত প্রধান হওয়ায় সেখানে গেলে অবশ্যই শীতের মোটা কাপড় সাথে নিয়ে যেতে হবে।

আমাদের এই পোস্টটি যদি আপনার ভ্রমনের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও উপকারে আসে এবং ভালো লেগে থাকে তাহলে পোস্টটি লাইক দিতে ভুলবেন না। এবং পোস্টটি শেয়ার করে আপনার আশেপাশের সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন।

দৃষ্টি আকর্ষণ: আমাদের পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে এবং এইসব পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আর ভ্রমনে গেলে কোথাও ময়লা ফেলবেন না। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
ভ্রমণকাল: আমাদের টিম সবসময় চেষ্টা করে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা বানান ভুল হয়ে থাকে বা ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে অথবা আপনার কোন ভ্রমণ গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তাহলে Comments করে জানান অথবা আমাদের কে ''আপনার মতামত'' পেজ থেকে মেইল করুন।