আমার জীবনের প্রথম ভ্রমণ | ভ্রমণকাল

আমার জীবনের প্রথম ভ্রমণ

first-trip-of-my-life
আমি কামরুল হাসান ভূঁইয়া রাসেল, ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ভার্সিটিতে শীতকালীন বন্ধ চলছিল, একদিন হঠাৎ সুমন (Sayem Ul Alam) ফোন দিয়ে বলল, তারেক (Mohammad Abdur Rashid) গ্রামের বাড়ি যাবে, ৩/৪ দিন থাকবে, চল ওদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। আমরা তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলাম। বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ ছেলেমেয়েই কলেজের গণ্ডি পেরুনোর আগেই পাহার সমুদ্র দেখে ফেলে। কিন্তু বিভিন্ন কারনেই ভ্রমণ বিষয়টা সেই সময় এতটা সহজ এবং জনপ্রিয় ছিল না।

ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ওদের বাড়ি যাওয়ার খুবই ইচ্ছে ছিল আমাদের। কারন ওদের বাড়ি রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির সীমান্তবর্তী খেদারমারা ইউনিয়নের দুরছড়ি গ্রামে, যেখানে কাপ্তাই লেক পাড়ি দিয়ে যেতে হয়। আর আমরা কেউই আগে কখনোই পাহাড়ে যাইনি। তাই মেঘ পাহাড় দেখার অন্য রকম এক আগ্রহ ছিল। প্রসঙ্গত, তারেকের দাদা দেশ বিভাগের সময় কালে মানে পঞ্চাশের দশকে চট্টগ্রাম থেকে সেখানে গিয়ে স্থায়ী বসতি গড়েছিলেন।

সুমনকে জিজ্ঞস করলাম, কত টাকা খরচ হতে পারে? বলল, খুব বেশী টাকা লাগবে না, যাতায়াতের খরচ আর যাতায়াত পথে হালকা খাওয়া দাওয়ার খরচ, সব মিলিয়ে দুই/আড়াই হাজার টাকার মত হলেই হবে। খরচ আমার কাছে একটা বড় ইস্যু ছিল। কারন নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান আমি। বাবাই পড়ালেখার প্রয়োজনীয় সকল খরচ চালাত কিন্তু বাড়তি টাকা কখনোই দিত না, আমিও কখনোই হাত খরচের জন্যে কোন টাকা চাইতাম না। আর খুব অল্পই টিউশনি করাতাম, তাই হাতে খুব একটা টাকা থাকত না।

ছোট বেলা থেকেই পরিবারের সাথে ঢাকায়ই বসবাস করছি, পড়ালেখাও পুরোটাই ঢাকা কেন্দ্রিক। চাঁদপুরের গ্রামের বাড়ী ছাড়া ঢাকার বাহিরে খুব একটা যাওয়া হয়নি কখনোই। ঘুরাঘুরি বলতে, বন্ধুদের সাথে ঢাকা বা এর আশেপাশে পিকনিকে যাওয়া। এই পর্যন্তই, এর বেশী কিছু না। ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষা দিতে খুলনা এবং সিলেট গিয়েছিলাম, রাতে গিয়ে দিনে পরীক্ষা দিয়ে আবার রাতেই ব্যাক করেছিলাম। মানে পরিবার ছাড়া তেমন কোথাও রাত কাটাইনি, কখনোই হোটেলে থাকা হয়নি।

পরদিন রাতেই আমরা তিন বন্ধু পার হেড মোটামুটি তিন হাজার টাকা করে নিয়ে সায়দাবাদ থেকে রাঙ্গামাটিগামী সৌদিয়া পরিবহনে উঠে পড়লাম। যদিও যাওয়ার আগের রাতেই হঠাৎ আমার শরীরে বেশ জ্বর দেখা দেয়, ১০২ ডিগ্রী জ্বর আর সাথে প্রচন্ড কাশি। তাই যাওয়ার দিন সকালে ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তার দেখিয়ে এন্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ঔষধ নিয়েনিলাম।

যাত্রা পথে কুমিল্লায় যাত্রা বিরতিতে হালকা নাস্তা করে পরে খাওয়ার জন্যে এক কেজি রসমালাই কিনে নিলাম। ভোরে রাঙ্গামাটি পৌছাল, মাঝে চট্টগ্রামে পর পাহাড়ি রাস্তার কারনে ড্রাইভার চেঞ্জ হল। আমরা রিজার্ভ বাজারে সাধারন মানের একটা হোটেলে ট্রিপল বেডের রুম নিলাম, খুব সম্ভবত ৬০০ টাকা দিয়ে। তারপর হালকা ফ্রেস হয়ে পাশের খাবার হোটেলে গেলাম নাস্তা করতে গেলাম। কুমিল্লা থেকে আনা রসমালাই দিয়ে পরোটা খেলাম। মিষ্টি পছন্দ করি বলে আমি অন্যদের তুলনায় একটু বেশি খেয়ে ফেলেছিলাম, এর মারাত্মক ফলাফল রাতে পেয়েছিলাম।

শুভলং ঝর্ণা

নাস্তা শেষ করে সোয়া সাতটার লংগদু গামী লোকাল লঞ্চ/ দোতালা ট্রলারে উঠে পরলাম শুভলং এর উদ্দেশ্যে। যেতে যেতে কাপ্তাই লেকের অসাধারন সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলাম। মহান আল্লাহ্‌র সৃষ্টি কত সুন্দর তার একটা ঝলক দেখলাম। বেশি অবাক হয়েছিলাম প্রায় কয়েক কিলোমিটার লম্বা লম্বা মুলি বাঁশের ভেলা। পাহাড়ি মুলি বাঁশ পরিবহনের এই উপায় দেখে সত্যিই অনেক অবাক হয়েছিলাম। কাপ্তাই লেকের দুই পাশের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে কখন যে শুভলং বাজারে চলে এসেছি বুঝতেই পারিনি। যেহেতু শীতকাল তাই শুভলং ঝর্নার পানি দেখার সৌভাগ্য হল না। শুভলং ঝর্নায় একফোটা পানিও ছিল না। মনটা কিছুটা খারাপ হয়ে গেল।

কাপ্তাই লেক

শুভলং ঝর্নায় পানি না পেলেও কাপ্তাই লেকের দুই পাশের সৌন্দর্য দেখে মন ভরে গিয়েছিল। শুভলং বাজারে নেমে কিছুক্ষণ বাজার ঘুরলাম, তারপর শুভলং আর্মি ক্যাম্পে ছোট একটা চিড়িয়াখানা ছিল সেটা দেখলাম। চিড়িয়াখানাটি অনেক ছোট হলেও বেশ কিছু পাহাড়ি প্রাণি জীবনে প্রথমবারের মত সেখানে দেখেছিলাম।

চিড়িয়াখানা দেখার পর দেখলাম আর্মি ক্যাম্পের পাশ দিয়ে একটা পায়ে হাটার পথ শুভলং পাহাড়ের দিকে উঠে গেছে। তিন বন্ধু কোন কিছু চিন্তা না করেই কথার ছলে সেই পথ দিয়ে উঠা শুরু করলাম। আমার শরীরে জ্বর এবং কাশ থাকায় আমার কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। তারপরেও কিছুটা কষ্ট করে ওদের সাথে তালমিলিয়ে উপরে উঠতে থাকলাম। কিন্তু উপরে উঠে যা কষ্ট ছিল এক নিমিষেই তা দূর হয়ে গিয়েছিল। আমরা পাখির চোখে কাপ্তাই লেক দেখার এক অসাধারণ অনুভূতি পেলাম। শুধু একটাই শব্দ বের হল, “সুবহানআল্লাহ্”, মহান আল্লাহ্‌ সৃষ্টি কত সুন্দর। উপর থেকে দূরের পাহাড়ি পাড়া গুলোকে খুবই ছোট মনে হচ্ছিল। লেক এবং লেকের দুই পাশের পাহাড় গুলোকেও অসাধারন লাগছিল।

পাহাড়ের উপর একটা ছোট পুলিশ/আনসার ক্যাম্প ছিল, তাঁদের কাছ থেকে পানি চেয়ে পানি খেলাম। উপরে দুই একটা ছবি তুললাম সেই সময়ের এনালগ/ ফ্লিম ক্যামেরা দিয়ে। সুমন একটা এমপিফোর নিয়ে গিয়েছিল, সেটাতেও একটা ভিজিএ ক্যামেরা ছিল। সেটা দিয়েও কিছু ছবি তোলা হল। উপরে বট গাছের মত একটা বড় গাছ ছিল, তার ছায়ায় বসে কিছুক্ষণ ঝিরিয়ে নামার পথ ধরলাম।

নামার সময় বুঝলাম, আমরা কথায় কথায় কত উপরে উঠেছি। যেহেতু আমাদের উপরে উঠার কোন পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না তথা পায়ে কোন ট্রেকিং স্যান্ডেল/জুতা ছিল না, এমনকি হাতে কোন লাঠিও ছিল না। তাই নামতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। ভয় লাগছিল পিছলে পরে যাই কিনা। বেশির ভাগ জায়গায়ই আমরা বসে বসে নেমেছিলাম। নিচ থেকে উপরে উঠার সময় নিচের দিকে তাকানো লাগে না তাই ভয়ও লাগেনি, কিন্তু নামার সময় ঘটনা পুরোই উল্টো।

পাহাড় থেকে নেমে আবারো শুভলং বাজারে গেলাম কিছুক্ষণ ঘুরলাম, লোকাল কিছু খাবার খেলাম, তারপর কাপ্তাই লেকের তাজা মাছ দিয়ে দুপুরের খাবার খেলাম। দুপুরের খাবার খেয়ে ফিরতি লঞ্চের জন্যে অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর লঞ্চের দেখা পেলাম। আবারো কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে রাঙ্গামাটি শহরে ফিরলাম।


রিজার্ভ বাজারে পৌছে হোটেলে গিয়ে একটু রেষ্ট নিয়েই শহর দেখতে বেড়িয়ে পরলাম। একটা সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ ঝুলন্ত সেতু দেখতে গেলাম। ঝুলন্ত সেতু এলাকাটা সেই সময় দেখতে আসলেই অনেক সুন্দর ছিল। আমরা পুরো বিকেলটা সেখানেই কাটিয়েছিলাম। সেখানে কিছু তাজা পাহাড়ি ফল খেলাম। অসাধারন ছিল প্রত্যেকটার স্বাদ।

সন্ধ্যার পর আমরা আবার রিজার্ভ বাজারে ফিরে আসলাম। হোটেলে রাতের খাবার খেলাম। এরপর আমার সারাদিনের অনিয়ন্ত্রিত খাবারের বিশেষ সকালের মাত্রতিরিক্ত রসমালাই খাওয়ার সাইড ইফেক্ট দেখা দিল। আমি বন্ধুদের রেখেই তাড়াতাড়ি রুমে চলে আসলাম। কিছুক্ষণ পর তারাও রুমে ফিরে আসল। পরেরদিনের লম্বা জার্নির জন্যে আমরা সবাই আগে ভাগেই ঘুমিয়ে পরলাম।

২য় দিন খুব সকালে উঠেই সময় নষ্ট না করেই সকালের নাস্তা সম্পন্ন করে ফেললাম। কারন যেতে হবে বহু দূর, আমাদের মুল গন্তব্য তারেকের দাদা বাড়ি রাঙ্গামাটির জেলার বাঘাইছড়ির উপজেলার সীমান্তবর্তী খেদারমারা ইউনিয়নের দুরছড়ি গ্রামে। লঞ্চ রিজার্ভ বাজার থেকে সাতটার দিকেই ছেড়ে দিল। কাপ্তাই লেকের পানি কেটে লঞ্চ চলা শুরু করল আর আমরা প্রকৃতি উপভোগ করতে লঞ্চের ভেতরের সিট থেকে বের হয়ে লঞ্চের সামনে গিয়ে বসলাম, আমরা উপভোগ করতে লাগলাম কাপ্তাই লেকের দুই পাশের মায়াবী সৌন্দর্য। বরকলের দেখা সেই সৌন্দর্য এখনো চোখে ভাসছে, মন হরণ করা ছিল সেই প্রকৃতিক সৌন্দর্য।

তারেক বলেছিল জেলা সদর থেকে তাদের বাড়ি যেতে বেশ অনেকটা সময় লাগবে তবে কোন ট্রেকিং করতে হবে না, লঞ্চ তাঁদের গ্রাম পর্যন্তই যাবে। আমার বাড়ী চাঁদপুর, তাই পানি পথের অভিজ্ঞতা আমার ভালোই ছিল। কিন্তু ওদের বাড়ি যেতে লঞ্চে যে সময় লেগেছে তা ছিল আমার ধারনার বাহিরে। যেখানে ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জ জেলা পাড়ি দিয়ে নদী পথে চাঁদপুর যেতে সময় লাগে মাত্র সোয়া তিন ঘণ্টা, সেখানে একই জেলায় এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় যেতে লেগেছিল সাত ঘণ্টারও বেশি সময়। তখন প্র্যাক্টিকালি বুঝলাম, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা রাঙ্গামাটি আর সবচেয়ে বড় উপজেলা হচ্ছে বাঘাইছড়ি। এই বাঘাইছড়িতেই কিন্তু হালের ক্রেজ সাজেক অবস্থিত, যদিও সেই সময় তেমন কেউ সাজেকের নাম জানত না, আমরাও জানতাম না।

কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে প্রায় ৭ ঘণ্টার লম্বা কিন্তু মনে রাখার মত এক যাত্রা দুপুর ২ টার কিছু পর দুরছড়ি ঘাটে এসে শেষ হল। লঞ্চ ঘাট বের হয়ে মিনিট দশেক হেটে ওদের বাড়িতে পৌছে গেলাম। যদিও ওদের বাড়ী এবং আশেপাশের এলাকা পুরোটাই সমতল ভূমি কিন্ত দূরে যেদিকেই তাকাই কেবেল উঁচু উঁচু সবুজ পাহাড়ই দেখা যাচ্ছিল। আর বাড়ির ঠিক পাশদিয়েই বয়ে গেছে পাহাড়ি ছড়া। পুরোই পটে আঁকা ছবির মতই মনে হচ্ছিল গ্রামটাকে।


বাড়ির আশেপাশে ভালোই সবুজ প্রান্তর ছিল, কিছু জলা জঙ্গলও ছিল। তারেকের চাচাতো ভাই জয়নালকে সাথে নিয়ে আমরা আশেপাশে টইটই করে ঘুরে বেড়িয়েছি। তবে বেশি দূরে কোথাও যাইনি নিরাপত্তা ইস্যুতে। পাশের পাহাড়ি ছড়াতে লাফালাফি, ঝাপাঝাপি, সাঁতার কাটা, গোসল করা, নৌকা চালানো কোন কিছু বাদ যায়নি। আর রাতের আকশে যত তারা দেখেছি, এত তারা আমরা কেউই আগে কখনোই দেখিনি। পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও আমরা তিন জন রীতিমত গবেষণা তর্ক বিতর্ক শুরু করলাম, সেখান থেকে কেন এত স্পষ্ট এত তারা দেখা যায়? এটা কি উচ্চতার কারনে নাকি দূষন মুক্ত নির্মল আবহাওয়ার ফলাফল।

খাওয়া দাওয়া কিংবা আতিথিয়তার কথা বলে শেষ করা যাবে না। আদর আপ্যায়ন কোন কিছুতেই কমতি রাখেন নি তাঁরা। প্রতি বেলাতেই অন্যান্য খাবারের সাথে ছিল কাপ্তাই লেকের ছোট বড় যা বিভিন্ন ধরনের তাজা মাছ, প্রতি বেলায় খাওয়া সকল মাছই ছিল এক কথায় অমৃত। যা আমার জীবনে এখন পর্যন্ত খাওয়া সবচেয়ে সুস্বাদু মাছ, এর আগে বা পরে এত স্বাদের মাছ আমি আর কখনোই খাইনি।

তাঁদের অসাধারন খাতির যত্নে তিনটা দিন যে কিভাবে কেটে গেল বুঝতে পারিনি। তারকের বড় চাচা, মেঝ চাচা, ছোট চাচা, চাচীগন, চাচাতো ভাই বোন প্রত্যেকেই ছিল মাটির মানুষ। তাঁদের আন্তরিক এবং অকৃত্রিম আতিথিয়েতা আজীবন মনে থাকবে। বিশেষ করে ওর বড় চাচা এবং চাচাতো ভাই জয়নাল আমাদের পেয়ে যেন মনে হয়েছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ

এর মাঝে তারেকের বড় চাচা কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন দ্বীপ এর গল্প করল। আরো বলল সেন্টমার্টিন দ্বীপটা খুবই সুন্দর যেন সম্ভব হলে একবার সেখান থেকে ঘুরে আসি। গল্প শুনতে শুনতে আমাদের মাথায় সেন্টমার্টিনের পোকা ভালো মত ঢুকে গেছে। কিন্তু এদিকে আমাদের কারোই পকেটের অবস্থা খুব একটা ভাল না। হিসেব করে দেখলাম আমাদের কাছে যা আছে তা দিয়ে ভাড়ার টাকা কোন রকম হবে, আর সুমন জানালো ওর গ্রামের এক বাল্যবন্ধু কক্সবাজারে জব করে এবং মেসে থাকে। তার সাথে থাকতে পারলে আমাদের খরচ বেশ কমে যাবে। আমাদের এসব পরিকল্পনা আঁচ করতে পেরে তারেকের বড় চাচাও কিছু টাকা ডোনেট করল। ফলে আমাদের ঈদের উপর শুক্রবার হয়ে গেল।


আমরাও আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করে আমাদের পরিকল্পনায় পরিবর্তন করে ঢাকা ফেরার পরিবর্তে কক্সবাজার যাওয়ার নিয়ত করে ফেললাম। তিনি আমাদের আরো পরামর্শ দিলেন, আমরা যাবার সময় যেন রাংগামাটির পরিবর্তে খাগড়াছড়ি হয়ে চট্টগ্রাম যাই। তাহলে নতুন আরেকটা জেলাও দেখা হয়ে যাবে। আর এ জন্যে আমাদেরকে খুব ভোরে রওনা দিতে হবে। সেই মোতাবেক উনি একটা ছোট ট্রলার রিজার্ভ করে রাখলেন যেন আমরা খুব ভোরেই রওনা দিতে পারি। সেদিন আমরা একটা নতুন স্বপ্ন আর প্রথম সমুদ্র দেখার এক বাদ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস নিয়ে ঘুমাতে গেলাম।

পরদিন মানে ট্যুরের পঞ্চম দিন ভোরে আমরা আগে থেকেই ঠিক করে রাখা একটা ছোট ট্রলারে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্য মারিশ্যার দিকে (খুব সম্ভবত, ঠিক মনে নেই) রওনা দিলাম। কিছুদূর ট্রলারে গিয়ে তারপর লোকাল চাঁদের গাড়িতে করে দুপুর ১২ টার দিকে খাগড়াছড়িতে পৌছালাম। ঘন্টা দুয়েক খাগড়াছড়ি শহরের এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করে একটি খাবার হোটেলে লাঞ্চ করে বেলা তিনটার দিকে চট্টগ্রামের বাসে উঠে পরলাম। পথের অসাধারণ সব দৃশ্য দেখতে দেখতে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার টার দিকে চট্টগ্রামে পৌছালাম। কোন সময় নষ্ট না করে বাস স্ট্যান্ডের পাশের খাবার হোটেল থেকে পরোটা, ডিম ভাজি, আলু ভাজি পলিতে নিয়েই কক্সবাজার গামী গাড়িতে উঠে পরলাম। গাড়িতে উঠার কিছু সময় পর সুমন তার বাল্যবন্ধুকে প্রথম বারের মত ফোন দিয়ে আমাদের আসার খবর জানাল। রাত সাড়ে এগারটার দিকে আমরা কক্সবাজারে পৌছাই।

বাস স্ট্যান্ডে সুমনের বন্ধু আগে থেকেই আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছিল। আমরা তার রুমে গিয়ে হালকা ফ্রেস হলাম। তারপর আমরা পৌউসীতে (খুব সম্ভবত) গিয়ে ভর্তা ভাজি দিয়ে রাতের খাবার শেষ করলাম। সুমনের বন্ধু একটু লজ্জিত হয়ে বলল, তিন জন থাকার মত কাঁথা বালিশ বিশেষ করে লেপ সে ম্যানেজ করতে পারেনি। তাই সে আমাদেরকে হোটেল ডায়মন্ডের তিন বেডের একটা রুম এক রাতের জন্যে ঠিক করে দিল। আমরা গিয়েই তাকে বলেছিলাম, পরদিন আমরা সেন্টমার্টিন যাব, কেয়ারী সিন্দবাদের আপ-ডাউন তিনটা টিকেট যেন সে কেটে দেয়। এর মাঝে আমরা কিছু সময় বিচে কাটালাম। রাতে সমুদ্রের গর্জন, জীবনে প্রথম বারের মত শুনছি।

অসাধারণ ছিল সেই অনুভুতি, যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। এর মাঝে সুমনের বন্ধু এসে জাহাজের টিকেটের একটা খাম দিয়ে বলল, এতে কেয়ারী সিন্দবাদের তিনটা আপ-ডাউন টিকেট আছে। অনেক রাত করে রুমে ফিরে এসে সবাই মনের মত করে একটা গোসল দিলাম। আমার দুই বন্ধু কিছুটা ঘুমালো, আমার এক ফোটাও ঘুম আসল না। এদিক ওদিক করতে করতেই ভোর হয়ে গেল।

ভোরে হোটেল চেক আউট করে আমাদের ব্যাগপ্যাক গুলো সুমনের বন্ধুর মেসে রেখে বাস স্ট্যান্ড চলে গেলাম, টেকনাফ গামী মাইক্রোতে উঠার জন্যে। বাস স্ট্যান্ডের একটা হোটেলে আমরা সকালের নাস্তার জন্যে ভুনা খিচুড়ি ওয়ার্ডার করলাম। খিচুড়ির প্লেট দেখে খুবই খুশী হয়ে গেলাম, দেখলাম প্লেটের উপর অনেক মাংসের টুকরা দিয়ে সাজিয়ে নিয়ে এসেছে। কিন্তু প্লেটে হাত দিয়েই ভুল ভাঙল, যেগুলোকে মাংসের টুকরা মনে করেছিলাম, সেগুলো আসলে ছিলা মাংসের মত করে কাটা হাড়ের টুকরো। তারপার কোন রকমে খেয়ে টেকনাফ গামী মাইক্রোতে উঠে পরলাম। মাইক্রো ড্রাইভারকে বললাম, আমাদের যেন কেয়ারী সিন্দবাদের ঘাটে নামিয়ে দেয়। পথে কয়েকবার চেকিং হল। সোয়া নয়টার দিকে আমাদের কেয়ারী সিন্দবাদের ঘাটে নামিয়ে দিল।


আমরা জাহাজে উঠার জন্যে লাইন ধরলাম। টিকেট চেকার আমাদের টিকেট চেক করে বলল এটা কেয়ারী সিন্দবাদের টিকেট না, এলসিটি কুতুবদিয়ার টিকেট। এ কথা শুনে আমরা হতভম্ব হয়ে গেলাম। কি করব কিছুই মাথায় আসছিল না। এত বড় ভুল কিভাবে হল বুঝতে পারলাম না। আমাদের আর সেন্টমার্টিন দেখা হবে না ভেবে, মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। টিকেট চেকার আমাদের অবস্থা বুঝতে পেরে বলল, এখনো কিছুটা সময় আছে, তাড়াতাড়ি গেলে এলসিটি কুতুবদিয়া ধরতে পারব, আর ঘাটটা খুবই কাছে। তাই আমরা আর সময় নষ্ট না করে দৌড়ে রাস্তায় এসে একটা সিএনজিতে উঠে গেলাম। ড্রাইভারকে তাড়াতাড়ি এলসিটি কুতুবদিয়ার ঘাটে নিয়ে যেতে বললাম। ঘাটে গিয়ে দেখলাম এলসিটি কুতুবদিয়া তখনো ছাড়েনি কিন্তু ছাড়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছে। আমরা কোন রকমে দৌড়ে গিয়ে উঠলাম। উঠা মাত্রই জাহাজটা ছেড়ে দিল।

পরে শুনেছিলাম, সুমনের বন্ধু আরেকজনকে দিয়ে টিকেট কাটিয়েছিল আর সে-ই এই ভুলটা করেছিল। আর আমাদের ভুল ছিল আমরা একটি বারের জন্যেও খামটা খুলে দেখিনি ভেতরে কি আছে। গাংচিলের আতিথিয়তায় মুগ্ধ হয়ে নাফ নদীর সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সাগরের নীল জলরাশিতে গিয়ে পরলাম। জীবনে প্রথমবারের মত অসীম নীল জলরাশি দেখলাম, এই অনুভূতি কখনোই ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সাগরে ঢেউ খুব বেশি ছিল না, তারপরও জাহাজ উপর নিচ করতে লাগল। জীবনে অনেকবার লঞ্চে করে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়েছি, কিন্ত সাগরের ঢেউয়ের কাছে সেগুলো আসলেই নগণ্য।
first-trip-of-my-life
দুপুর ১২ টার দিকে সেন্টমারটিন জেটি ঘাটে নামলাম যেহেতু রাত্রি যাপন করবো না তাই থাকার হোটেল খোঁজার কোন প্যারা ছিল না। আর ঘুরে বেড়ানোর জন্যে যেহেতু হাতে সময় খুবই অল্প আর সাথে অনেক খিদে লেগেছিল তাই তাড়াতাড়ি একটি টং ঘরে ঢুকলাম খাওয়ার জন্য। এখনাকার মত কোন পাকা দোকান পাট তখন জেটি ঘাটে ছিল না। বাজারটাও ছিল খুবই ছোট।বেশির ভাগ দোকানই ছিল টিন-বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরী। আমরা সামুদ্রিক মাছ, শুটকী ভর্তা, চিংড়ি মাছ দিয়ে দুপুরের খাবার খেলাম। বিল দিতে গিয়ে হিসেবে কিছুটা অসংগতি মনে হল, দেখলাম তারা বিলের যোগে ভালো রকমের গ্যাপলা করেছে। হিসেবের ভুল ধরিয়ে দিতেই তারা দুঃখ প্রকাশ করল। যেহেতু আমাদের ঐদিনই ফিরতে হবে তাই কোন রকম দেরী না করেই দ্বীপ দেখতে জেটির উত্তর দিকের বীচ ধরে হাঁটা শুরু করলাম। হাঁটতে হাঁটতে আমরা হুমায়ুন আহমেদ স্যারের “সমুদ্র বিলাস” পর্যন্ত চলে গিয়েছিলাম। তারপর দ্বীপের মাঝ বরাবর জেটির দিকে হাঁটা শুরু করলাম। পথে মাঝের বড় মসজিদটা তে আমরা যোহরের নামাজ আদায় করলাম।


এটা সত্যি সেন্টমারটিনে অন্তত দুইটা রাত যাপন না করলে এর সৌন্দর্যের কিছুই উপভোগ করা হয় না। কিন্তু বাজেটের অপ্রতুলতায় আমাদের পক্ষে সেবার সেখানে রাত্রি যাপন সম্ভব হয় নি। এরপর আরও অনেকবার সেন্টমারটিন গিয়েছি অনেক রাত থেকেছি, এমনকি একাধিক পূর্নিমাতেও সেন্টমারটিনে রাত্রিযাপন করেছি কিন্তু প্রথম বারের অল্প সময়ের ফিল আর কখনোই পাইনি। প্রথমবার সেন্টমারটিনের যে র সৌন্দর্য দেখেছি তা অনেকাংশেই এখন আর বিদ্যমান নেই। অসংখ্য নারিকেল গাছ আর কেয়া বন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আস্তে আস্তে এখন সেন্টমারটিন একটা কনক্রীটের জজ্ঞলে রূপ নিয়েছে।

সেন্টমারটিনের রাত্রি যাপন করতে না পারার এক রাশ দুঃখ নিয়ে পৌনে তিনটার দিকে আমরা জেটি ঘাটে ফিরে এসে জাহাজে উঠে গেলাম। জাহাজে উঠার পর আমার দুই বন্ধুর মনে হল, কিছু সিঙ্গারা আর পেয়াজু আনলে ভাল হত। যেই ভাবা সেই কাজ, ওরা জাহাজ থেকে নেমে সিঙ্গারা পেয়াজু আনতে দোকানে গেল। বেশ কিছুক্ষণ তাদের দুইজনের আর খোঁজ পেলাম না। এর মধ্যেই জাহাজ স্টার্ট দিল, আমি আতংকিত হয়ে গেল। জাহাজ নোঙর তুলে ঘাট ছেড়ে দিল, তখনই আমার দুই বন্ধুর দেখা পেলাম ঘাটে। আমি যথেষ্ট চেষ্টা করলাম জাহাজটা থামাতে, কিন্তু ব্যর্থ হলাম, তারা আর উঠতে পারল না। জাহাজের স্ট্যাফরা বলল, সমস্যা নেই তাদেরকে পরের অন্য যেকোন একটা জাহাজে আসতে বলল।

সারাটা পথ আমি একা একা আসলাম, মনটা খুব খারাপ ছিল। আসার পথে টেকনাফের পাহাড়ের খাঁজে অসাধারণ এক সূর্যাস্ত দেখলাম। তারপর টেকনাফ ঘাট থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে একা একাই মাইক্রোতে উঠে পরলাম। সোজা গিয়ে বন্ধুর মেসে গিয়ে উঠলাম। আমার দুই বন্ধু আরো ঘণ্টা দেড়েক পরে আসল। ইতিমধ্যেই সুমনের বাল্য বন্ধু তার মেসেই আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে ফেলেছে। অনেক রাত পর্যন্ত আমরা আড্ডা দিলাম, তাস খেললাম তারপর ঘুমাতে গেলাম। পরদিন সকালে উঠে সাগর দেখতে বিচে চলে গেলাম। আমার অন্য বন্ধুরা তখনো ঘুমাচ্ছিল।


সকালের দিকেই সবাই সাগরে চলে গেলাম জলকেলি করার জন্য। সাগরের পানিতে প্রথম অবগাহনের স্মৃতি আজীবনের জন্যে অমলিন হয়ে থাকবে। আমরা ঐদিনই আসার টিকেট করে ফেললাম। টিকেট কাটার পর আমাদের কাছে খুচরো কিছু টাকা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। দুপুরের পর বার্মিজ বাজার গুলোতে হাঁটতে বের হলাম। কিন্তু কারো পকেটেই তেমন কোন টাকা পয়সা ছিল না, তাই কেউই তেমন কোন কেনাকাটা করতে পারল না। বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর জিনিস কেবলমাত্র দেখেই চোখ জুড়ালাম।

ভ্রমণ পরিসমাপ্তি

রাত আটটায় অসংখ্য অমলিন স্মৃতি নিয়ে ইউনিক পরিবহনে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম আর অমূল্য কিছু স্মৃতি নিয়ে ঢাকায় ফিরে এলাম। আর এর মাধ্যমে পরিসমাপ্তি হয়েছিল হঠাৎ সিদ্ধান্তে করা সাতদিনের একটি অসাধারণ ব্যাকপ্যাকিং ট্যুর। এই ভ্রমণ শুরু করার দুইদিন পরও বুজতে পারিনি এই ট্যুরে আমরা কক্সবাজার সেন্টমারটিন যাব, সাগর দেখবো। এরপর আরো বহুবার সাগরের কাছে গেলেও প্রথম বারের ফিল কখনোই আর পাইনি।

এই ট্যুরে তারেকের দাদাবাড়ীর আতিথেয়তা আজীবন মনে থাকবে। তারেক, সুমন, তারেকের চাচা-চাচী, চাচাতো ভাই-বোন বিশেষ করে জয়নাল ( Joynal Abedin) সুমনের বাল্যবন্ধু সহ সকলের প্রতি রইল আন্তরিক কৃতজ্ঞতা, সকলে আন্তরিক সহযোগীতায় আমাদের ভ্রমণটা এতো সুন্দর হয়েছিল।

এই ট্যুরে অনেক কিছুই আমার জীবনে প্রথম বারের মত ছিল, যেমনঃ
# ঢাকার বাহিরে বন্ধুদের সাথে প্রথম মুক্ত ভ্রমণ
# প্রথম পাহাড় দেখা (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি)
# প্রথম পাহাড়ে উঠা/ট্রেকিং (শুভলং পাহাড়)
# প্রথম ঝর্না দেখা (শুভলং ঝর্না)
# প্রথম সাগর দেখা (কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্টমারটিন)
# প্রথম দ্বীপ দেখা (সেন্টমারটিন)
# প্রথম কৃত্রিম হ্রদ দেখা (কাপ্তাই)
# প্রথম ব্যাকপ্যাকিং ট্যুর
# আবাসিক হোটেলে প্রথম রাত্রি যাপন
# বন্ধুদের সাথে প্রথম রাত্রি যাপন
# মোবাইল ব্যাবহার শুরু করার পর প্রথম বারের মত টানা সাত দিন নেটওয়ার্কের বাহিরে থাকা।


এটি ছিল কাঁচা হাতে আমার প্রথম লেখা, তার উপর কাহিনীটা অনেক বড় হয়ে গিয়েছে তাই আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আর অনেক কষ্ট করে ধৈর্য্য ধরে এই লম্বা কাহিনীটি পড়ার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ।

পরিশেষে বলতে চাই, এই দেশটা আমাদের। তাই এই দেশটাকে সুন্দর করে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। আমরা শপথ নেই, আমরা নিজেরা এই দেশটাকে আর নোংরা করব না, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলব না। অন্যকেও নোংরা না করার জন্যে বুঝানোর চেষ্টা করব। অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক যেখানে সেখানে ফেলা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকব। আজ থেকে কোথাও ঘুরতে গেলে নিজের ব্যাগের বা প্যান্টের একটা পকেটকে সাময়িক ডাষ্টবিন হিসেবে ব্যবহার করব। তারপর তা যথাস্থানে ফেলব।

আর একটা কথা, কোথাও ঘুরতে গেলে স্মৃতি ছাড়া কিছু নিয়ে আসব না আর পদচিহ্ন ছাড়া কিছু রেখে আসব না।

এই ভ্রমণ কাহিনী লিখেছেন:
ম্যানেজার, সিষ্টেম অপারেশন্স
বাটারফ্লাই গ্রুপ, ঢাকা থেকে

দৃষ্টি আকর্ষণ: আমাদের পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে এবং এইসব পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আর ভ্রমনে গেলে কোথাও ময়লা ফেলবেন না। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
ভ্রমণকাল: আমাদের টিম সবসময় চেষ্টা করে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা বানান ভুল হয়ে থাকে বা ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে অথবা আপনার কোন ভ্রমণ গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তাহলে Comments করে জানান অথবা আমাদের কে ''আপনার মতামত'' পেজ থেকে মেইল করুন।