ডোমখালী সমুদ্র সৈকত | ভ্রমণকাল

ডোমখালী সমুদ্র সৈকত

domkhali-beach
অসাধারণ সৌন্দর্যে ঘেরা এক স্থান ডোমখালী সমুদ্র সৈকত, একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে সমুদ্র ভ্রমণপিপাসুরা এমন সবস্থানেই যেতে চায়। আকাবাঁকা পথে পাহাড় বা সমুদ্র ভ্রমণ দুটোই ভালো লাগে। এছাড়া মিরসরাই উপজেলার ডোমখালী সমুদ্র সৈকতে গেলে দেখা যায় ঝাউবন, লাল কাঁকড়া চর, উত্তাল সাগরে নৌকা ভেসে বেড়ানো, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, হরিণের পায়ের ছাপ।

যারা একদিনের ভ্রমণে শহরের মধ্যে কোন একটি স্থানে যেতে চান তাদের জন্য এই সমুদ্র সৈকত সেরা গন্তব্য হতে পারে। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগররের কাজ চালু হওয়ার পর মেরিন ড্রাইভ বাঁধ নির্মাণের ফলে বিশাল এলাকাজুড়ে সৈকত সৃষ্টি হয়েছে।

এই স্পটটি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার একেবারে দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত। এই স্থানটির নাম ডোমখালী সমুদ্র সৈকত। এটি ডোমখালী বিচ নামেও পরিচিত। শুধু দিনের বেলাই নয়, রাতেও অসংখ্য মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার দেখা যায় সমুদ্রের তীরে। রাতে বিশাল সমুদ্রের গর্জনতে শুনে তরুণ-তরুণীরা সেখানে ছুটে আসেন। পূর্ণিমার রাতে তরুণ-তরুণীরা সেখানে ভিড় জমায়। মিরসরাই থেকে এই সৈকতের দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার।

উপজেলার শাহেরখালী ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকায় সমুদ্র সৈকতের আবিষ্কার করেছেন স্থানীয় পর্যটকরা। যা ইতিমধ্যে 'ডোমখালী সমুদ্র সৈকত' নামে পরিচিতি পেয়েছে। ডোমখালী পুরোনো সুইসগেট থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্রের মোহনায় আরেকটি সুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে। যা দিয়ে সমুদ্রের পানি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এর একটু উত্তরে বিশাল কাজ চলছে। আরেকটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বেড়িবাঁধের অংশে মূলত শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে।

ডোমখালী সমুদ্র সৈকত নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন ভ্রমণপিপাসুরা। প্রতিদিন শত শত পর্যটকের ঢল নামছে এখানে। ডোমখালী সমুদ্র সৈকত দেখতে পতেঙ্গা সৈকতের মতো।

নবনির্মিত বাঁধ জুড়ে সবুজের সমারহ, পাখির কিচিরমিচির, কিছু দূরে সমুদ্রের সাথে মিশে যাওয়া ছোট ছোট খালের অবিরাম প্রবাহ, বাঁধের পূর্বে গ্রামীণ জনপদ এবং দক্ষিণে সমুদ্রের কোল জুড়ে ম্যানগ্রোভ বন। সুইসগেটের কাছে ব্যস্ত জেলেরা, সাগর থেকে মাছ নিয়ে ফিরছেন জেলেরা। কেউ অবসরে জাল বুনে, রয়েছে উত্তাল সমুদ্রে সারি সারি নৌকা।

লাল কাঁকড়া, বিভিন্ন ধরণের সামুদ্রিক কাঁকড়া, ভেজা মাটিতে ছোট গর্তে গর্ত করে মুখতুলে থাকে। সবুজ বন জুড়ে হরিণের পায়ের ছাপ। শীতকালে খেজুরের মিষ্টি রসের স্বাদ আর মহিষের দুধের চা পান করলে শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। সকালে রোদে আলোয় সাগরের ঢেউগুলো চিকচিক করে। বিকেলের মিষ্টি রোদ আর সূর্যাস্তের সৌন্দর্য যে কারো মন কেড়ে নেবে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের যেকোনো স্থান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়দরোগাহাটে নেমে সিএনজি যোগে সাগরপাড়ে যাওয়া যায়। ৪০ টাকা জনপ্রতি ভাড়া নিবে।

সিএনজি রিজার্ভ নিলে ভাড়া পরবে ২০০-২৫০ টাকা। এছাড়া নিজামপুর কলেজের সামনে নেমে সেখান থেকে সিএনজি যোগে যাওয়া যায়। তবে এক-দু জন হলে মোটরসাইকেলে যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য চট্টগ্রাম শহরের পর্যটন এলাকা থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে একেখান মোড়ে মায়াবী রিসোর্ট ও অলংকার মোড়ে রোজভিও, সুইটড্রিম আবাসিক হোটেল রয়েছে। রাত্রী যাপনের জন্য এ সকল হোটেল থেকে যে কোনটা বেছে নিতে পারেন।

কোথায় খাবেন

ডোমখালী সমুদ্র সৈকত এলাকায় থাকা-খাওয়ার জন্য এখনো কোনো রেস্টুরেন্ট বা আবাসিক হোটেল গড়ে ওঠেনি। খাবারের জন্য রয়েছে ছোট কমলদহ বাজারে বিখ্যাত ড্রাইভার হোটেল। যা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে।


আরো দেখুন

দৃষ্টি আকর্ষণ: আমাদের পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে এবং এইসব পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আর ভ্রমনে গেলে কোথাও ময়লা ফেলবেন না। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
ভ্রমণকাল: আমাদের টিম সবসময় চেষ্টা করে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা বানান ভুল হয়ে থাকে বা ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে অথবা আপনার কোন ভ্রমণ গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তাহলে Comments করে জানান অথবা আমাদের কে ''আপনার মতামত'' পেজ থেকে মেইল করুন।