আফগানি শাসনামলের শুর বংশের শেষদিকের শাসক গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহের রাজত্বকালে জনৈক সুলায়মান নামে একজন মসজিদটি নির্মাণ করেন। পূর্বদিকের কেন্দ্রীয় প্রবেশদ্বারের উপরে স্থাপিত একটি শিলালিপি অনুসারে এ মসজিদটির নির্মাণকাল ৯৬৬ হিজরি (১৫৫৮-৫৯ খ্রী: ) । মসজিদটি ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল, মসজিদটির তিনটি গম্বুজ নষ্ট হয়েছিল। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত।
রেলপথে
যেতে চাইলে লালমনি এক্সপ্রেস বা রংপুর এক্সপ্রেসে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে সান্তাহার স্টেশনে নেমে সেখান থেকে অটোতে যেতে
পারবেন। বালুডাঙ্গা থেকে বাস অথবা সিএনজিতে যেতে
হবে মান্দায়, নওগাঁ থেকে মান্দার দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। সেখানে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়ক থেকে তিন মাইল দক্ষিণ-পূর্ব
দিকে কুসুম্বা গ্রামে কুসুম্বা
মসজিদটির অবস্থান।
বর্তমানে প্রচলিত বাংলাদেশের পাঁচ টাকার নোটে এই মসজিদের ছবি দেওয়া আছে।
মসজিদটির বিবরন
মসজিদটি
দৈর্ঘ্যে
৫৮ফুট, প্রস্থে
৪২ফুট। দুই সারিতে ৬টি গোলাকার গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের গায়ে রয়েছে লতাপাতার নকশা। প্রাচীর
ঘেরা মসজিদটির প্রধান ফটকে প্রহরী চৌকি ছিল। মসজিদটিতে
ইটের গাঁথুনি, সামান্য বাঁকানো কার্ণিশ এবং সংলগ্ন আটকোণা বুরুজ। এগুলো থেকে মসজিদের স্থাপত্যে বাংলা স্থাপত্যরীতির প্রভাব
পাওয়া যায়। মসজিদের মূল
গাঁথুনি ইটের হলেও এর সম্পূর্ণ দেয়াল এবং ভেতরের খিলানগুলো পাথরের
আস্তরণে ঢাকা। মসজিদের স্তম্ভ, ভিত্তি মঞ্চ,
মেঝে ও
দেয়ালের জালি নকশা পর্যন্ত পাথরের। মসজিদটি
আয়তাকার এবং এতে রয়েছে তিনটি বে এবং দুটি আইল। এর
পূর্বপ্রান্তে তিনটি এবং উত্তর-দক্ষিণে একটি করে প্রবেশপথ।
মসজিদের
কেন্দ্রীয়
মিহরাবটি পশ্চিম দিকের দেয়ালের থেকে আলাদা। পশ্চিম
দেয়ালের দক্ষিণ-পূর্ব
দিকে এবং মাঝামাঝি প্রবেশপথ বরাবর দুটো মিহরাব রয়েছে যা মেঝের
সমান্তরাল। উত্তর-পশ্চিম
কোণের বে-তে মিহরাবটি একটি উঁচু বেদীর উপর বসানো। মোট
মিহরাব আছে
৩টি, যার
সবগুলো কালো পাথরের তৈরি। মসজিদটির
সম্মুখে ২৫.৮৩ একের আয়তনের একটি বিশাল জলাশয় পুকুর রয়েছে। মিহরাবে
আঙ্গুরগুচ্ছ ও লতাপাতার নকশা খোদিত রয়েছে।
মসজিদের
ভিতরে উত্তর-পশ্চিম কোনের স্তম্ভের উপর একটি উঁচু আসন আছে। ধারণা করা হয়, এই আসনে বসেই তৎকালীন কাজী/বিচারকরা
এলাকার বিভিন্ন সমস্যার বিচার কার্য পরিচালনা করতেন।
কুসুম্বা মসজিদ কিভাবে যাবেন
কুসুম্বা
মসজিদ যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে নওগাঁ। শ্যামলী, হানিফ, এসআর ট্রাভেলসের এসি, ননএসি
সরাসরি
ঢাকা থেকে নওগাঁর বাস পাওয়া যাবে। বাসে গেলে নামতে
হবে নওগাঁর
বালুডাঙ্গা
বাস টার্মিনালে।
মসজিদটির অবস্থান।
কোথায় থাকবেন
রাতে থাকার জন্যে নওগাঁ শহরে বেশ কিছু ভালো
মানের হোটেল রয়েছে। হোটেল অবকাশ, হোটেল যমুনা, হোটেল ফারিয়াল অন্যতম। এছাড়া
মান্দায় থানা ডাকবাংলো আছে, যেখানে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে
থাকাতে পারবেন।
নওগাঁ আরো কিছু দর্শনীয় স্থান
▢ রবি ঠাকুরের কুঠিবাড়ী
▢ বালিহার রাজবাড়ী
▢ পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার
▢ পাহাড়পুর যাদুঘর
▢ আলতা দীঘি